ইতিহাস বিকৃত করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সরকার: ফখরুল

0

ব্নিপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে সরকার। সেই সাথে তিনি গণটিকার কর্মসূচি জনগণের সাথে সরকারের আরেকটি তামাশা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

সোমবার সকালে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনায় এবং সারাদেশে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিল হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার ইতিহাসকে বিকৃত করার জন্যে এবং জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অত্যন্ত অপমানজনক কথাবার্তা বলছে। এই কথাবার্তাগুলো বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাসকে বিকৃত করা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা খু্ব ভালো করেই জানি যখন ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটে সেই হত্যাকাণ্ডের পরে কারা ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ, তাদেরই নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমেদ সেদিন ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে- এই কথা আমরা ভুলে যাইনি। তাদেরই সেনাপ্রধান সেদিন ছিল শফিউল্লাহ। তাকে তারা পরবর্তীকালে এমপি বানিয়েছে এবং সেই সময়ের যারা কুশীলব ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই তারা এখন মর্যাদার সাথে তাদের সরকারে অবস্থান দিয়েছে।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘১৫ আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে সেদিন যারা বিভিন্নভাবে সেই ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে আতাঁত করেছিল এবং তাদেরকে সাহায্য করেছিল সেই কর্ণেল তাহেরের নাম কিন্তু তারা একবারও উচ্চারণ করে না। কর্ণেল তাহের সেদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে রেডিও সেন্টারে এসেছিলেন এবং তারপরের দিন বঙ্গভবনে মিটিংও করেছেন। তাদের কথা তারা বলে না। তারা তৎকালীন জাসদের গণবাহিনীর নেতা হাসানুল হক ইনুর কথা একবারও বলে না। বরং তাকে তারা মন্ত্রী বানিয়েছে। ’৭৫ সালে সামরিক আইন জারি করেছিলেন খোন্দকার মোশতাক। এই কথা জনগণের কাছে তারা কখনো বলে না।’

ফখরুল বলেন, ‘যে ব্যক্তিটি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যিনি বাংলাদেশকে পুনর্জন্ম দিয়েছিলেন, যিনি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করবার জন্য একটা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সেই মানুষের বিরুদ্ধে আজকে তারা কুৎসা রটনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই মিথ্যা প্রচারণা কোনোটাই জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না এবং সত্য ইতিহাস বেরিয়ে আসবে।’

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সকলকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

গণটিকাদান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার করোনা পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেই টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্নীতি করেছে। তারা গণটিকা প্রদানের নামে আরেকটি তামাশা জনগণের সামনে উপস্থিত করেছে। যার ফলে সমগ্র দেশে করোনাভাইরাসের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘লকডাউনের নামে প্রকৃত পক্ষে তারা এসময়টা বিরোধী দলের ওপরে ক্র্যাকডাউন করেছে। তারা কোনো সভা-সমিতি, কোনো জমায়েত করতে দিচ্ছে না। ‍নিজেরা কিন্তু ঠিকই সব করে যাচ্ছে।’

কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে দলের স্থায়ী কমিটির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও আবদুস সালাম বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম,তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, জেড এম মূর্তজা চৌধুরী তুলা, বিলকিস ইসলাম, রফিক শিকদার, হায়দার আলী লেলিন, ফরিদা ইয়াসমীন, হাসান জাফির তুহিন, মশিউর রহমান বিপ্লব, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এস এম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, উলামা দলের মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com