পরীমনির অভিযোগ নিয়ে সংসদে যা বললেন এমপি হারুন-উর-রশীদ
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার কবলে পড়েছেন বলে অভিযোগ তোলা পরীমনি এখন মৃত্যুর পথযাত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংসদসদস্য হারুনুর রশীদ।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে ‘আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন ১৯৮৯’ সংশোধনী প্রস্তাব ও ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ বিল ২০২১’ এর আলোচনা করতে গিয়ে পরীমনি ইস্যুতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় হারুন বলেন, ‘কী উদ্বেগ জনক ঘটনা! আজ সকালে আসার পথে পত্রিকায় দেখলাম পরীমনি, কী ভয়ানক ঘটনা! সেমাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কমনা করেছে। সে এখন মৃত্যুর পথযাত্রী। তাকে ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।’
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি রোববার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনার কয়েক ঘণ্টাপর বিষয়টির বিস্তারিত নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে আসেন।
পরী জানান, ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরা বোট ক্লাবে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে এই ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।
নাসির ইউ মাহমুদ বা নাসির উদ্দিন মাহমুদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান।উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের ২০১৪–১৫ ও ২০১৫–১৬ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছিলেন লায়ন ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান।
সাংবাদিকদের পরী জানান, ঘটনার পর থেকে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোথাও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন কী নিজের জীবন নিয়েও আশঙ্কার কথা জানান এই অভিনেত্রী।
পরীর সংবাদ সম্মেলনের পর বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছে পুলিশ। সোমবার সকালেই বনানীতে এই অভিনেত্রীর বাসার সামনে ৫সদস্যের পুলিশের প্রহরা বসানো হয়েছে।
দেশে অপরাধীদের দমনে আইনের প্রকৃত প্রয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন হারুন। বলেন, ‘কয়দিন আগে দেখলাম মুনিয়া, যাকে বনানী–গুলশানে ব্যাভিচারের কেন্দ্র করা হয়েছিল। তার সঙ্গে যারা জড়িত, আইন কী নেই! আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কী করছে। আজ অন্য কেউ হলে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে দেয়া হতো। আইনের আওতায় নিয়ে আসা হতো। তারা নিঃসন্দেহে মাফিয়া। আপনারা (আইন) তৈরি করছেন, সংশোধন করছেন। তার আগে সিদ্ধান্ত নিন আইন জনগনের কল্যাণে প্রয়োগ করবেন।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সংসদে আইন উত্থাপন করছি। আইন পাসও হচ্ছে। আইন করে লাভটাকী হচ্ছে, আইনের যদি প্রয়োগ না থাকে। আমরা যে উদ্দেশ্যে আইন করছি, তা যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে আইন করে লাভটাকী হচ্ছে। এক্ষেত্রে আইন পাস করাটাও বৃথা।’
সংসদে বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা দুর্নীতির বিষয়ও তুলে ধরেন হারুন। বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা একটা ফ্যাশনে পরিনত হয়েছে। তাহলে আমি কী ধরে নেব, গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে গণমাধ্যমে যে দুর্নীতির খবর হয়েছে, তা অসত্য।
‘অর্থমন্ত্রী বললেন, অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত কারা, তাদের নাম দিন। তাহলে রাষ্ট্রের কাজ কী? আমাকে কেন নাম দিতে হবে? যারা অর্থ পাচার করছে, তাদের জন্য তো আইন আছে। যারা অর্থ পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে আপনি আইনের প্রয়োগ করুন।’