ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রান বিতরণে বাধা ও নামাজ পড়তে দেয়নি পুলিশ: নজরুল ইসলাম মঞ্জু

0

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণকাজে শুধু বাধা দিয়ে পুলিশ ক্ষ্যান্ত হয়নি, জোহরের নামাজ পড়তেও বাধা দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে দুই ত্রাণকর্মীকে মারপিট করে অমানবিক আচরণ করেছে। কয়রা থানার এসআই মিন্টু সাইফুল যে ধরনের অশালীন অভদ্র বেয়াদবি আচরণ করেছে তাতার রাজনীতির ৪২ বছরে ইতোপূর্বে দেখেনি। যার ইশারা ইঙ্গিতে ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা পুলিশ ঘটিয়েছে তাকে প্রকাশ্যে আসার আহবান জানিয়ে পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল রোববার, জুন ১৩, ২০২১, দুপুর ১২টায় বিএনপি কার্যালয়ে কয়রা উপজেলায় বিএনপির ত্রাণ বহরে হামলা, মারপিট, হুমকি, গালিগালাজ, নামাজ আহারে বাধা এবং পাইকগাছায় ঢুকতে না দেয়ার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর জেলা বিএনপির  প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আহবান জানান।

মঞ্জু আরো উল্লেখ করেন, গত শনিবার খুলনা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে কয়রা পাইকগাছা উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় গিয়ে বেলা ১১টায় কয়রা উপজেলার কালনা আমিনিয়া মাদ্রাসায় ৫৫০ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। পরেক্ষতিগ্রস্থ এলাকা বাঁধ পরিদর্শন করে ফিরে আসার পর কয়রা থানার পুলিশ বিএনপির নেতাকমীদের ওপর চড়াও হয়, লাঠি নিয়েসাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর দিকে তেড়ে আসে। এসময় পরিচয় দেওয়ার পরও তারা ত্রাণ বিতরণের লিখিত অনুমতি চায়। এসময় জেলা প্রশাসকের অনুমতির কথা বললে পুলিশ কটুক্তি করে। এসআই মিন্টু সাইফুল গালিগালাজ লাঠি নিয়ে মারতে ঔদ্ধত্য হওয়া ত্রাণ বহরের গাড়ীর ড্রাইভারদের গ্রেফতারের হুমকি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে গাড়ী তাড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদ করলে তারা আরও মারমুখী হয় এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ না করলে  গ্রেফতারের ভয় দেখায়। সময় জোহরের নামাজপড়তে চাইলে তারা বাধা দেয়। পুলিশ বলে নামাজ কয়রায় নয়, অন্য কোথাও পড়তে হবে। এরপর নেতৃবৃন্দন ভ্যানে করে তিন কিলোমিটার পথ এসে গাড়ীতে উঠে রওনা হয়ে দশ কিলোমিটার দূরে চাঁদআলী ব্রিজ পার হয়ে কমরউদ্দিন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে পার্শ্বের মসজিদে জোহরের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতিকালে পুলিশ সেখানে এসে হামলা চালায়, এতে ত্রাণকর্মী শামিম আশরাফ মেহেদী হাসান মিলন আহত হয়। তখন পুলিশ সদস্য মিন্টু বলে নামায এখানে পড়া যাবে না, কথা না শুনলেথানায় যেয়ে নামাজ পড়তে হবে। বিকালে পাইকগাছায় ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচি থাকলেও পাইকগাছার পুলিশও ঢুকতে দেয়নি।

মঞ্জু আরো উল্লেখ করেন, বিএনপির সংগ্রামী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্থ উপকূলীয় জনগণকে রক্ষায় তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন। গত বছরও এমনি সময় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ উপকূলীয় অঞ্চলের খুলনা সাতক্ষীরার উপজেলা সমূহের নিরন্ন আশ্রয়হীনদের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছিলো বিএনপি। খুলনা বিএনপি সব সময় মানবিক সাহায্য নিয়ে জনগণের পাশে থেকেছে, এছাড়া দুই দফা  করোনাকালীন সময়ে খাদ্য সাহায্য কর্মসূচিতে আমরা ২৫ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। ২৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আমাদের করোনা কলসেন্টার এখনও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, খুলনা বিএনপি উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য খুলনা মহানগর জেলা বিএনপি ত্রাণ কমিটি গঠন করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিপূর্বে আমরা উপকূলবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি বাস্তবায়নে খুলনার সম্মানিত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছি। গত জুন ২০২১ তারিখ দাকোপের চালনায় দূর্গত দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছি। ত্রাণের মত ধরণের মানবিক কাজে কেন এহেন অমানবিক আচরণ? এরকমই যদি হয় তাহলে উপকূলের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে আর কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন সহযোগিতার হাত নিয়ে দাঁড়ানোর ঝুঁকি গ্রহণ করতে চাইবে কী? যুদ্ধচলাকালীন সময়েও পৃথিবীর কোথাও ত্রাণ কার্যক্রমে কোন বিঘ্ন সৃষ্টি করার নজীর নেই।

উল্লেখ্য ইতিপূর্বে উপকূলে টেকসই বাঁধসহ অঞ্চলের দুর্গত মানুষের ন্যায্য দাবিসমূহের পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিতেএকাধিকবার স্থানীয় সরকারি দলের পান্ডারা হামলা চালিয়েছে। কয়রার ভাঙ্গন কবলিত প্রত্যেকটি স্থানে স্থানীয় এমপি তারনিজস্ব আত্মীয়স্বজন দিয়ে কাজ করায় বলে উপকূলবাসীর অভিযোগ রয়েছে। দায়সারা গোছের কাজ করে অর্থ লোপাট করায়বারবার এসব দুর্বল বাঁধ ভেঙ্গে যেয়ে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছেএকথা সর্বজন বিদিত।

তিনি পুলিশের এমন অশালীন অভদ্র বেয়াদবি আচরণে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ   ভবিষ্যতে বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রম বিনাবাঁধায় পরিচালনা করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকবীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, জেলা সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, শেখ মুশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খানসাচ্চু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, এডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, আঃ রাকিব মল্লিক, এড. মোমরেজ, সিরাজুল হক নান্নু, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মহিবুজ্জামান কচি, জালু মিয়া, ইকবাল হোসেন খোকন, মেহেদী হাসান দিপু, একরামুল কবির মিল্টন, হাসানুর রশিদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, শাহনাজ পারভিন, গোলাম কিবরিয়া, শরিফুল ইসলাম বাবু, আবু সাঈদ শেখ, আলম, নাজির উদ্দিন নান্নু, খন্দকার ফারুক হোসেন, চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক, আফসার মাষ্টার, ইশহাক তালুকদার, শাহাবুদ্দিন মন্টু, রবিউল ইসলাম রবি, মেজবাহ উদ্দিন মিজু, আঃআলিম, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম লিটন, রেহানা আক্তার, মোহাম্মাদ আলী, জামাল উদ্দিন মোড়ল প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com