মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন সিনওয়ার
গাজা উপত্যকা ভিত্তিক ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের (হামাস) নেতা ইয়াহিয়া সিনয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোবাইডেনকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বার্তা দেন।
তিনি বাইডেনকে বলেন, ‘আপনার উচিত ফিলিস্তিনি স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক প্রস্তাব গুলো মেনে চলতে ইসরাইলকে বাধ্য করা।‘
হামাসের এই নেতা বলেন, জেরুসালেমে ইসরাইলি দখলদারিত্ব, পবিত্র রমজান মাসে জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদে মুসুল্লিদের ওপর হামলা, শেখ জাররাহ এলাকার পরিবার ও লোকজনের ওপর বসতি স্থাপনকারী ও দখলদার বাহিনীর হামলা, ১৯৪৮ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করতে থাকা, গাজা উপত্যকার ২০ লাখ লোকের ওপর অবরোধ আরোপ করার জন্যই এবারের যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, জেরুসালেমে এসব কিছু বন্ধ না হলে আবারো ওই অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে, আর তা পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দিতে পারে।
সিনওয়ার ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপের যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন। তিনি বরেন, ইসরাইল এফ৩৫ ও এফ১৬ বিমান দিয়ে বেসামরিক বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে, উঁচু ভবন গুলো ধসিয়ে দিয়েছে। গাজার ৫০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।তারপর তারা অভিযোগ করছে যে হামাস কেন ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এমন অভিযোগ যথাযথ নয়।
তিনি বলেন, রকেট বর্ষণের এগ আমরা ইসরাইলি বেসামরিক লোকজনকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম। পুরো বিশ্ব জানে, ইসরাইলের আয়রন ডোম আছে, আশ্রয় কেন্দ্র আছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষার কোনো কিছুই নেই।
তিনি বলেন, তিন বছরেরও বেশি আগে আমরা মার্চ অব রিটার্ন শুরু করেছিলাম। তা ছিল পুরোপুরি বেসামরিক, শান্তিপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রতিরোধ। কিন্তু ইসরাইল আমাদের লোকজনকে টার্গেট করেছে, শত শত লোককে হত্যা করেছে, অনেকের অঙ্গহানি ঘটিয়েছে।
সিনওয়ার ঘোষণা করেন, আমরা দখল দারিত্বের মধ্যে আছি। আমাদের যেকোনো উপায়ে দখলদারিত্বের বিরোধিতা করার অধিকার আছে।
ইসরাইলের সাথে অস্ত্রবিরতির পর প্রথম বক্তৃতায় সিনওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে ইসরাইলের অভ্যন্তরে তাদের ১০হাজার ‘শহিদ‘ রয়েছে। জেরুসালেম ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা ‘সাড়া দিতে প্রস্তুত।‘
তিনি বলেন, আমরা সামনের দিকে জনপ্রিয় প্রতিরোধ পরিচালনা করব। আর এর পেছনভাগ সংরক্ষিত থাকবে সামরিক প্রতিরোধের মাধ্যমে।
সিনওয়ার বলেন, অস্ত্রবিরতি কার্যকর করার সামান্য আগে হামাস একসাথে ৩০০ রকেট নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেছিল।এসব রকেটের ১৫০টি নিক্ষিপ্ত হতো তেল আবিবকে লক্ষ্য করে। কিন্তু মিসর ও কাতারি মধ্যস্ততাকারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনকরে আমরা তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি দাবি করেন, হামাসের ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পাল্লার মিনিটে ১০০টি রকেট নিক্ষেপ করার সক্ষমতা রয়েছে।
হামাসের এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হলেও এখনো কোনো পক্ষ সমঝোতায় সই করেনি।
সিনওয়ার জোর দিয়ে বলেন, আল–আকসা আর জেরুসালেম হলো আমাদের ‘রেড লাইন।‘
তিনি বলেন, শত্রুরা যদি জেরুসালেম ও পবিত্র স্থানগুলোর কোনো ক্ষতি করে তবে আমরা আমরা আরো বড় যুদ্ধের জন্য তৈরী।
উচ্ছেদের মুখে থাকা শেখ জাররাহ ও সিলওয়ানের অধিবাসীদের দৃঢ় থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হামাস তাদের পাশেআছে।
বন্দী বিনিময় চুক্তি নিয়ে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, সে প্রসঙ্গে সিনওয়ার বলেন, এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে ইসরাইলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ ব্যাপারে অগ্রগতি হচ্ছে না।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, গাজার সমস্যার সমাধান না হরে হামাস সব কিছু জ্বালিয়ে দেবে।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ আরো ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য দেশের অন্যান্য গ্রুপগুলোও তাদের সাথে যোগ দিত বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।