মহামানব গৌতম বুদ্ধ ছিলেন অহিংস, ন্যায় ও সাম্যনীতির এক বলিষ্ঠ কন্ঠ: তারেক রহমান
শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণী দিয়েছেন —
বাণীতে তারেক রহমান বলেন,“শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। মানব বিশ্বের ইতিহাসে এই দিনটি এক মহিমান্বিত দিন। এ দিনেই অহিংসা ওশান্তির দিশারী মহামানব গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। বুদ্ধ জীবনের মহান এ তিনটি প্রধান ঘটনাই মানব বিশ্বের ইতিহাসে ‘বুদ্ধ পুর্নিমা’ নামে অভিহিত। এদিন সমগ্র বিশ্বের বৌদ্ধরা বুদ্ধের জীবন দর্শণকে গভীরভাবে অনুধাবন করেন। বিশ্বের বৌদ্ধরা এ দিনটি অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এবং উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন। আজথেকে আড়াই হাজার বছরেরও অনেক পূর্বে বৈশাখী পূর্ণিমায় শুভ তিথিতে গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীতে অবির্ভূত হয়েছিলেন। গৌতমবুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ এই তিনটি মহান স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা বৌদ্ধ ইতিহাসে ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’ নামে অভিহিত।আমি আজ এই শুভ দিনে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সকলকে জানাচ্ছি শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার মৈত্রীময় শুভেচ্ছা এবং উষ্ণ অভিনন্দন। সাথে সাথে আমি বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়কেও জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, যুগে যুগে মহামানবেরা পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্যের আলো দেখিয়েছেন, চিনিয়েছেন কল্যাণের পথ। নানা সংকট ও প্রতিকুলতার মধ্যেও সত্য ও ন্যায়ের পথে মানুষকে আহবান করেছেন। মহামানব বুদ্ধ ছিলেন অহিংস, ন্যায় ও সাম্যনীতির একবলিষ্ঠ কন্ঠ। তাঁর অনুশাসনও ছিল আত্মজয় ও আত্মপ্রতিষ্ঠার পক্ষে।
তারেক রহমান বলেন, গৌতম বুদ্ধ তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করে মানুষের দুঃখ দূর্দশা ঘোচানোর জন্য মানবতা ও সার্বজনীন সাম্য ওঅহিংসা বাণী প্রচার করেন এবং আর্ত–পীড়িত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও শিক্ষা ছিল মানুষের নিরঙ্কুশ অধিকার। স্বাধীনতা, সর্বাঙ্গীন কল্যাণ এবং সর্বপ্রাণীর নিরাপদ বিশ্ব সৃষ্টি করা। তিনি প্রচলিত জাতিভেদ প্রথায়ও আবদ্ধ হননি, তিনি সর্বশ্রেণীর মানুষের নিকট মুক্তির বাণী তুলে ধরে জগতে এক নুতন ধর্মাদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের মর্যাদা চিহ্নিত হবেকর্মে এবং যোগ্যতায়; জন্ম বা বংশ মর্যাদা দিয়ে নয়। ধর্ম প্রচারের প্রথম থেকেই তিনি এভাবে মানুষের মূল্যবোধকে জাগ্রত করার প্রচেষ্টায় নিবেদিত হন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনেই এদেশের সকল বর্ণ, ধর্মীয় সম্প্রদায় ও নৃগোষ্ঠীর নিবিড় সহাবস্থান নিশ্চিত করে। বাংলাদেশে সকল ধর্মের অনুসারীরা পার¯পরিকসৌহার্দ্যরে বন্ধনে আবদ্ধ। আমরা ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে এক অভিন্ন জাতি। আমরা সবাই বাংলাদেশী। ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং সকল ধর্মের মর্যাদা রক্ষায় আমরা সবসময়ই সচেষ্ট থেকেছি এবং আগামীতেও সে প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ এক দু:সময় অতিক্রম করছে। ভয় ও আতঙ্ক সর্বত্র বিরাজ করছে।দেশে দেশে মৃত্যু হানা দিচ্ছে করোনা ভাইরাসের আঘাতে। এহেন সংকটজনক পরিস্থিতিতে বিশ^বাসীর অপরিসিম মানসিকশক্তি যোগাবে গৌতম বুদ্ধের বাণী। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকল বাধা–বিপত্তির মধ্যেও আমাদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত গণতন্ত্র, শান্তি, নিরাপদ আশ্রয়, মহামারী থেকে মুক্তি একদিন আসবেই।
এসময় তারেক রহমান সকলকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, চলুন আমরা আজ সকলে দল, মত, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঐক্য ও আত্মীয়তাবোধ সৃষ্টি করি এবং নাগরিকদের স্বাধীনতা ও যথাযথ মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করি। সর্বোপরিত্যাগে, উদারতায় ও মহত্ত্বতায় উন্নত সুখময় জীবন এবং সবধরনের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতামুক্ত সমাজ ও বিশ্বজনীন শান্তি প্রতিষ্ঠা করি–শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার এ দিনে আমরা সেই শপথ ও প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হই। বুদ্ধ পূর্ণিমা সফল হোক। বিশ্বে শান্তিবিরাজ করুক।
এছাড়াও তিনি বুদ্ধ পূর্ণিমার সকল আনুষ্ঠানিকতার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।