খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ
আশাকরি সর্বোচ্চ আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে জামিন দেবেন : খন্দকার মাহবুব হোসেন
সুপ্রিম কোর্টের সর্বত্র `বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই’ এই দাবিতে ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে গেছে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন ওপর শুনানির অনুষ্ঠিত হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীরা কোনো বিক্ষোভ সমাবেশ করেনি। তবে সুপ্রিম কোর্টের সর্বত্রই শোভা পাচ্ছে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ব্যানার ও ফেস্টুুন। সুপ্রিম কোর্টের বাইরে ঢাকা জজ কোর্টের সর্বত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যানা-ফেসটুন টানানো হয়েছে। বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিভিন্ন শ্লোগাল লেখা এসব ব্যানার ফেসটুন টানিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এনেক্স এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ে (শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ভবনে) খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে তার বিশাল ছবি সম্বলিত ৭০ ফিট লম্বা ও ১০ ফিট চওড়া একটি ব্যানার টানানো হয়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের সর্বত্র এবং ঢাকা জজ কোর্টে প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যানার ও ফেসটুন টানানো হয়েছে।
এসব ব্যানার ও ফেস্টুনে লেখা হয়েছে ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি, বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের রাজনীতির অবিসংবাদিত জীবন্ত কিংবদন্তি, তৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রে বলিষ্ট কণ্ঠস্বর, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক, স্বাধীনতাকামী শক্তির কাণ্ডারি, জাতীয়তাবাদী শক্তির কাণ্ডারী, আইন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে দণ্ডিত, গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী মহীয়সী নেত্রী, তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশন্ত্রেী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশে সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীরা একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনের অংশ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য জামিন দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আইনগতভাবে ও মানবিক কারণে তাকে চিকিৎসার জন্য জামিন দেয়া দরকার। তিনি জামিন পেলে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হওয়ার পর আইনজীবীরা আর কোনো বিক্ষোভ সমাবেশ করেনি। তবে বিক্ষোভ শ্লোগান না দিলেও আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের সর্বত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ সেটা সবাই জানে। সাত বছরের সাজা মামলা এবং বেগম খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক মহিলা। এ কারণে মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়াই তিনি জামিন পাওয়ার যোগ্য। তবুও আদালত তার মেডিকেল রিপোর্ট কল করেছেন। আমরা আশাকরি তাকে জামিন দেয়া হবে। তাকে যদি জামিন না দেয়া হয় সেক্ষেত্রে আমাদের মনেকরার যথেষ্ট কারণ থাকবে যে একটি বিশেষ উদ্দেশে ও সরকারের ইচ্ছা পূরণের জন্য তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি দেশের সর্বোচ্চ আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে ও নিজেদের ভাবমুর্তি রক্ষার জন্য তাকে জামিন দেবেন। যদি জামিন না দেয়া হয় বিচার বিভাগের ভাবমুর্তি রক্ষার জন্য আমরা আইনজীবীরা অবশ্যই আন্দোলন করব। দেশের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সে আন্দোলন কঠিন আন্দোলন হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সবচে’ জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে আটকে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। সেদিন থেকে তাকে সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বারংবার বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিশে বিশেষ ক্ষেত্রে নির্মমভাবে তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমাদের মনে রাখা উচিৎ বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র পুন:পতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশে প্রথম মেয়েদের শিক্ষাকে অবৈতনিক করেছেন। সারা দেশে বৃক্ষরোপন ও মৎসচাষের মাধ্যমে বিপ্লব করেছেন। তার এদেশ ও জাতীল উন্নয়নে যে অবদান রয়েছে সে দিক বিবেচনা করে এবং মানবিক কারণে অসুস্থতাকে আমলে নিয়ে এইবার অন্তত মামান্য আপিল বিভাগ উনার প্রতি ন্যায় বিচার করবেন এবং জামিন দেবেন।