হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেফতার
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম–মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুর ১ টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রহমানিয়া জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে তাকে আটক করে। মামুনুল হক গত কয়েকদিন ধরেই ওই মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন।
তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশিদ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হেফাজত ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতারের পর তেজগাঁও বিভাগের উপ–কমিশনারের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের পাশাপাশি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব। শনিবার ওই দলটির যুগ্ম–মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। এছাড়া শনিবার বারিধারা মাদ্রাসা থেকে হেফাজতের আরেক নেতা জুনায়েদ আল হাবীবকেও গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে হেফাজতের প্রায় ১০ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হল।
এদিকে গ্রেফতার নিয়ে শনিবার মাওলানা মামুনুল হক তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন– সহিংসতার দায় হেফাজতের উপর চাপানো উদোর পিন্ডি বুদোর ঘারে চাপানোর নামান্তর ! তিনি বলেণ, ২৭ মার্চ থেকে ২রা এপ্রিল বিক্ষোভ, হরতাল, দোয়া ওপ্রতিবাদ সমাবেশ হেফাজতে ইসলাম আহুত প্রতিটি কর্মসূচী পালিত হয়েছে প্রশাসনের অনুমোদন স্বাপেক্ষে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে।২৬শে মার্চের গন্ডগোলের দায় কোনো ভাবেই হেফাজতের উপর বর্তায় না। এ দায় হেফাজতের উপর চাপানো সুস্পষ্ট অন্যায়।হরতালের পূর্বাপর বি.বাড়িয়ায় সংঘটিত সহিংসতার সাথে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু, সেটা প্রশ্ন স্বাপেক্ষ।সেখানে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কোন্দল ও তাদের কর্তৃক হামলার কথা খোদ প্রশাসনও অস্বীকার করে না। সুতরাং বি.বাড়িয়ার সহিংসতা ও জ্বালাও–পোড়াওয়ের দায় হেফাজতের উপর চাপিয়ে দেয়াও উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো বৈ কিছুই নয় ।হেফাজতের কর্মসূচী চলাকালীন ৪ দিনে ঢাকায় তো একটা ইট–পাটকেলও ছোড়া হয়নি। পুলিশের নিরাপত্তা ও বেষ্টনীর মধ্যেই সবগুলো কর্মসূচী পালিত হয়েছে। তাহলে রোযা–রমযানের দিন ঢাকায় কেন ধরপাকড় চলছে।
আজিজুল হক ইসলামাবাদী কাকে আঘাত করেছে? মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী কোথায় হামলা করেছে? মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন রাযী কার মাথায় বাড়ি মেরেছে? মাওলানা যুবায়ের আহমদ কার বারাভাতে ছাই দিয়েছে? মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মুফতী বশিরুল্লাহ, মাওলানা শরিফুল্লাহরা কোথায় কার উপর হাত তুলেছে?
করোনা পরিস্থিতির ভয়বহতায় লক–ডাউনের সময় এভাবে আলেম–ওলামাদের নির্বিচারে গ্রেফতার অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয়।
নিজ দেশে যারা পরবাসীর মত থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন, তাদের কথা ভিন্ন। অন্যথায় আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ঈমানদারগণ এটানিরবে মেনে নিতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে জুলুমের মুক্ত বাতাস থেকে প্রতিবাদের বন্দিত্বই হাজার গুনে শ্রেষ্ঠ !