আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া করি যে— আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্ব পাচ্ছি: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিরোধী মত দমনে সরকারের এতো অত্যাচার, নির্যাতন–নিপীড়নের পরেও এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে কেউ চলে যায়নি। এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ।’
শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ১১ বছর আগে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায়বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মিলনী এ সভার আয়োজন করে।
সরকার দানব হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা দুই দানবের হাতে পড়েছি। একটি হচ্ছে— বর্তমানসরকার। যারা অন্যদেশের স্বার্থ হাসিল করছে। আরেক দানব হচ্ছে— করোনাভাইরাস। এই মহামারি শুধু আমাদের নয়, গোটা বিশ্বকে আক্রান্ত করছে।’
তিনি বলেন, ‘এতো সমস্যার মধ্যেও দল, অঙ্গ সংগঠনকে টিকিয়ে রাখা, শক্তিশালী করা— এটা অবশ্যই আমাদেরকেই করতেহবে। আজকে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া করি যে— আমরা এখন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বপাচ্ছি। সব নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ রেখে আমরা কাজ করতে পারছি এবং বাংলাদেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এতো অত্যাচার, এতো নির্যাতন–নিপীড়নের পরেও এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে কেউ চলে যায়নি। এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটা ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে। এতো কঠিন সময় এদেশের মানুষকখনও অতিক্রম করেনি। অত্যন্ত সুপরিকল্পি ভাবে দেশের স্বাধীনতা–সারভৌমত্বকে হরণ করে নিয়ে, গণতন্ত্রবিহীন করে এখানে জনগণের অধিকার গুলোকে কেড়ে নেয়া হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আজকে আমাদের যেমন সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল ইলিয়াস আলীর মতো সাহসী নেতাকে, সেই সময়ে আমরা তাকে পাচ্ছি না। আমি বিশ্বাস করি যে, ইলিয়াস আলী যে প্রজন্ম থেকে এসেছিলেন, সেই প্রজন্মেরপরের প্রজন্ম যারা আসবে তারা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য, সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্যে আরওবেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’
ইলিয়াস আলী বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য প্রেরণা উল্লেখ করে দলের মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে এইনিখোঁজ হওয়া, গুম করে দেয়ার ঘটনা ইলিয়াস আলীকে দিয়ে শুরু হয়েছে। এটা করেই প্রথমে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী যেশক্তি সেই শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা কখনও নিরাশ হব না। আমরা জানি— ইলিয়াস আলী আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।আমরা বিশ্বাস করি— আমাদের অন্যান্য ছেলেরা যারা হারিয়ে গেছে, নিখোঁজ হয়েছে তারাও ফিরে আসবে। যদি তারা ফিরে নাআসে, তাদের এই চলে যাওয়া বা নিখোঁজ হওয়ার মধ্য দিয়ে যে শক্তি সঞ্চয় করবে বাংলাদেশের মানুষ— আমাদের তরুণ প্রজন্ম, ভবিষ্যতের প্রজন্ম তারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশকে একটা মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হবে এবং এটা অবশ্যই আমরা পারব।’
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়ি চালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। বিএনপি অভিযোগ করে আসছে– সরকারের বাহিনী তাকে ‘গুম’ করেছে।
জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাবেক সহ–সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মির্জা আব্বাস, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, জহিরউদ্দিন স্বপন, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুলকাদের ভুঁইয়া জুয়েল এবং নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা প্রমুখ।