লকডাউনে শ্রমিকদের জন্য মাসিক সরকারি অনুদানের দাবি বিএনপির

0

চলমান লকডাউনে শ্রমিকদের জন্য মাসিক সরকারি অনুদানের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার ( এপ্রিল) দুপুরে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এই দাবি জানান। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের প্রয়াত সদস্য জাফরুল হাসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাফরুল হাসান।

ফখরুল বলেন, এই করোনাকালে অবশ্যই শ্রমিকদেরকে সাবসিডি দিতে হবে। প্রত্যেক শ্রমিক নেতা, শ্রমিক কর্মী ভাই যারা আছেন, তাদেরকে অবশ্যই সরকারের তরফ থেকে ত্রাণ সহযোগিতা করতে হবে। এই মুহূর্তে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় দাবি।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই দাবিটা আজকে করছি যে, দেশে ইনফরমাল সেক্টরে যত শ্রমিক আছেন, আমাদের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলোতে যত শ্রমিক আছেন, অন্যান্য কলকারখানার সাথে যেসব শ্রমিক যুক্ত আছেন, তাদের প্রত্যেককে মাসের একটা অনুদান অবশ্যই দিতে হবে যেটা অন্যান্যদের দেয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা কালে শুধু মালিকদেরকে দিলেই হবে না, শুধুমাত্র ব্যাংক থেকে ঋণ দিলেই হবে না। আমি লন্ডনে আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম সে একটা ফ্যাক্টরিতে সে আমাকে বলছে যে, আমি এখন খুব ভালো অবস্থায় আছি। কেনলকডাউনে? সে বলছে যে, সরকার আমাকে দিচ্ছে ১৫ পাউন্ড করে। এটাকেই বলে ওয়েল ফেয়ার স্টেট, এটাকে বলে মানুষের জন্য ভালোবাসা, কমিটমেন্ট টু দ্য পিপল। আসুন আমরা এই আন্দোলনটা গড়ে তুলি শ্রমিকদের নিয়ে যে, আজকে এই সময়েতাদের ইনসেনটিভ দিতে হবে, তাদের ত্রাণ দিতে হবে, তাদের সহযোগিতা দিতে হবে।

দলের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের দলের অনেক কষ্ট, অনেক দুঃসময়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। আমাদের প্রধান যিনি আমাদের নেতৃত্ব দেন যার কথায় আমরা অনুপ্রাণিত হই, আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিন বছর ধরে আজকে কারাগারে। এটা ভাবা যায় না কল্পনা করা যায় না। আজকে যিনি আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব, তিনি হাজার মাইল দূরে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।

তিনি বলেন, ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। নতুন করে আবার শুরু হয়েছে এই কয়েকদিনে ২০ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। করোনায় আমাদের খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, রুহুল কবির রিজভী থেকে শুরু করে অনেকে আজকে অসুস্থ হয়ে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। আমাদের মওদুদ ভাই (মওদুদ আহমদ) আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, আমাদের রুহুল আলম চৌধুরী চলে গেছেন, আমাদের ইয়াং একজন নেতা খন্দকার আহাদসহ অনেকে চলেগেছেন। এই অবস্থা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে, আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

ফখরুল বলেন, আজকে দেখুন, গ্রোথ হচ্ছে মালিকদের। তারা গাড়ি কিনছেন, বাড়ি কিনছেন, বিদেশে প্রপার্টি তৈরি করছেন।আর আমার শ্রমিক ভাইয়েরা, বোনেরা তারা বস্তিতে একটা ঝুপড়ির মধ্যে বাস করেছে, দুইবেলা ঠিক মতো তারা খেতেও পায় না।দিস ইজ দ্য রিয়েলিটি। কেউ কথাও বলছি না এই বিষয়ে।

জাফরুল হাসানের কর্মময় জীবনের কথা তুলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে জাফরুল ভাই চলে গেছেন। আমার বার বার তারকথা মনে পড়ে এজন্য যে, সত্যিকার অর্থে আজকাল এই ধরনের নেতা আর কোথায়? এক নজরুল ইসলাম খান আছেন। বাতি জ্বালিয়ে আর তো আমি দেখতে পাই না। কারণ কোথায় কে জোরেশোরে কথা বলবেন, কার কথায় উজ্জীবিত হবে, বিষয়ে বোধহয় শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যারা জড়িত আছেন, শ্রমিক রাজনীতির সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের এইবিষয়গুলো দেখা উচিত।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে প্রচার সম্পাদক মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান জুয়েল, বাংলাদেশট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক স্কপ নেতা ওয়াজেদউল ইসলাম খান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com