কাশ্মীরে যুবকরা রাত কাটাচ্ছেন গাছের মগডালে
অধিকৃত কাশ্মীরে রাতে হানা দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। আতঙ্কে পাশের বাগানে আপেলগাছে গিয়ে উঠে পড়েন মোহাম্মদ মাল্লা নামের স্থানীয় এক যুবক।
এর পর সারারাত সেই গাছের মগডালেই কেটেছে তার। পুলওয়ামার রামহু গ্রামের অধিবাসীদের দাবি, অচলাবস্থার মধ্যে কাশ্মীরে তাদের জীবন কাটছে আতঙ্কে ও উদ্বেগে। -খবর আনন্দবাজারপত্রিকা অনলাইনের
গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা কেড়ে নেয় ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সরকার। এর পর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন স্থানীয়রা।
তাদের অভিযোগ, এর পর থেকে রাতে রাতে হানা দেয়া শুরু করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। বাসিন্দাদের বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি স্থানীয়দের বাড়িঘর, গাড়ি ভাঙচুর করছে সেনাবাহিনী। কেড়ে নিচ্ছেন বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র।এ ছাড়া স্থানীয় মসজিদগুলোর লাউডস্পিকার থেকে ঘোষণা আটকাতে সেগুলোর প্রবেশপথই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মসজিদের ঈমামদেরও হয়রানি ও হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। বাসিন্দাদের দাবি, ফের পাথর ছুড়লে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়দের দাবি, ইতিমধ্যেই গ্রামের ২৩ জন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির পর থেকে আর তাদের দেখা পাননি পরিবারের সদস্যেরা।
গ্রেফতারির ভয়ে এখন গ্রামের বাইরে রাত কাটাচ্ছেন অনেক যুবক। তাদেরই মধ্যে একজন মোহাম্মদ মাল্লা। রামহু থেকে ফোনে বললেন, কয়েক দিন আগে মাগরিবের নামাজের ঠিক আগে শিস শুনতে পেলাম। গ্রামে বাহিনী ঢুকলে এভাবেই শিস দিয়ে একে অপরকে সতর্ক করি আমরা।
তিনি বলেন, গ্রামের পাশেই আমার বাগান। সেখানে পালিয়ে গেলাম কয়েকজন।
ভয়ে আপেলগাছে উঠে পড়েছিলেন তারা। রাতে আর ফেরার সাহস পাননি। গাছেই রাত কাটিয়েছেন। খিদে মিটিয়েছেন আপেল খেয়ে।
পুলওয়ামার পুলিশের মুখপাত্রের বক্তব্য, যারা ঝামেলা পাকাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেয়া হবেই। ওই গ্রামের কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে পাথর ছোড়ার অভিযোগ আছে।
কেবল রামহু নয়, গোটা পুলওয়ামা জেলাতেই এখন কুণ্ডলী পাকানো তারের ব্যারিকেডের ছড়াছড়ি। বাহিনীর গাড়িছাড়া রাস্তায় নেই কোনো যানবাহনও।