হেফাজতের কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় আসকের নিন্দা

হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধেআইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা ও দাবি জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে গৃহীতকর্মসূচির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে কত কয়েকদিন ধরে সাংবাদিকরা নানা হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন, যা অত্যন্তঅনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। এ ধরনের হামলা স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায় বলে মনে করেআসক।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৬ মার্চজাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় হেফাজতে ইসলাম ও সরকার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ারঘটনার সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিকরা। কারো কারো মুঠোফোন ওক্যামেরাও কেড়ে নেয়া হয়।

অন্যদিকে ২৭ মার্চ হরতাল চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় ও সাইনবোর্ড এলাকায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি।

আসক জানায়, হামলার শিকার ও আহত ফটো সাংবাদিকরা হলেন– প্রথম আলোর হাসান রাজা ও আশরাফুল আলম, ডেইলিস্টারের এমরান হোসেন ও প্রবীর দাস, দেশ রূপান্তরের হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জয়িতা রায়, নিউএইজের আবদুল্লাহঅপু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের মাহমুদুজ্জামান অভি, ডেইলি সানের রিয়াজ আহমেদ ও সারাবাংলা ডট নেটের হাবিবুররহমান। ঢিলের আঘাতে ৭১ টিভির প্রতিবেদক ইশতিয়াক ইমন এবং পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে বাংলাভিশনের জ্যেষ্ঠপ্রতিবেদক দীপন দেওয়ান ও বাংলা নিউজের শেখ জাহাঙ্গীর আলম আহত হন।

হরতাল চলাকালে ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের ছবি তোলার সময় নিউজ বাংলাটোয়েন্টিফোরের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধির মোবাইল ফোন কেড়ে নেন হরতাল সমর্থকরা। অন্যদিকে দৈনিক সংবাদের নারায়ণগঞ্জপ্রতিনিধি অভিযোগ করেছেন যে, হেফাজত কর্মীরা তাকে হেনস্তা করেন এবং তিনি যে মুসলিম তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকেকলমা পড়তে বাধ্য করেন।

একই এলাকায় হরতাল সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন নিউএইজের সাংবাদিক মোক্তাদির রশিদ রোমিও। চ্যানেলটোয়েন্টিফোরের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন পিকেটাররা। সাইনবোর্ড মোড়ের কাছে জিটিভির ক্যামেরাপারসন মাসুদুর রহমানমারধরের শিকার হয়েছেন। ইট–পাটকেল ছোড়ার ফুটেজ নেয়ার সময় তাকে মারধর করা হয়। হেফাজতকর্মীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াজেলা প্রেস ক্লাবেও ভাঙচুর চালান। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হন প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজুদ্দিন জামি।

আসক সাংবাদিকদের ওপর এমন হামলা অত্যন্ত দুঃখজন উল্লেখ করে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপরহামলার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।