শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে মানুষ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দু’দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যার প্রতিবাদে আগামী সোম ও মঙ্গলবার দুইদিন বিক্ষোভ সমাবেশ–মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
তবে হেফাজতে ইসলামের রবিবার (২৮ মার্চ) সকাল–সন্ধ্যা হরতালে আনুষ্ঠানিক কোনো সমর্থন জানায়নি দলটি।
শনিবার (২৭ মার্চ) বিকালে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামআলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার দিবসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে মানুষ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আগামী ২৯ মার্চ ঢাকাসহ সকল মহানগরীতেবিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ৩০ মার্চ জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল অথবা সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আগামীকাল রবিবার সকাল–সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে– এই কর্মসূচির প্রতি বিএনপির সমর্থনআছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যেটা প্রতিবাদ করছি, বিক্ষোভ মিছিল করছি সেটা হচ্ছে স্বাধীনতাদিবসের দিনে মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদে। খুব স্পেসিফিক বলছি যে, প্রত্যেকটা সংগঠনের, প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিকঅধিকার আছে প্রতিবাদ করা বা তার মত প্রকাশ করবার। সেই মত প্রকাশ করার ক্ষেত্রে যখন গুলি করা হয়েছে আমরা সেইটারপ্রতিবাদ করছি, আমরা এর বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করছি।‘
‘আমাদের একটি জিনিস মনে রাখতে হবে যে, প্রত্যেকটি নাগরিকের ন্যায় সঙ্গত সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে ভিন্নমত পোষণকরবার। সেখানে তারা যদি কোনো কর্মসূচি দেয় বা হরতাল আহবান করে সেটা যৌক্তিক তো বটেই। তবে একই সঙ্গে সরকার যদিতাকে প্রতিহত করবার বা বন্ধ করবার অগণতান্ত্রিক অথবা হঠকারী হুমকি দেয়– সেটা হবে একেবারেই হঠকারী ব্যবস্থা। সরকারেরকাছে থেকে এই ধরনের ব্যবস্থা কেউ আশা করতে পারে না। যদি এখানে কোনো অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তার দায়–দায়িত্বসরকারকেই বহন করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশে নির্বিচার লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ এবং একই সঙ্গে আওয়ামী সন্ত্রাসীবাহিনীর আক্রমনের প্রতিবাদে যে রক্ত ঝরেছে বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রাম ও ব্রাক্ষণবাড়ীয়ায়–এটা নিঃ সন্দেহে ৫০ বছরেরবাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম একটি কলঙ্ককজনক অধ্যায়। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ওপ্রতিবাদ ইতিমধ্যে জানিয়েছি ‘
তিনি জানান, স্বাধীনতা দিবসের দিনে দেশে বিভিন্ন স্থানে মানুষ হত্যা ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল রবিবারজাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল সারাদেশে বিক্ষোভ করবে।
এই তিন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা শনিবারও বিক্ষোভ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে পুলিশি হামলা ও গ্রেপ্তারের মুখে পড়েছে। হবিগঞ্জেমনজুরুল কিবরিয়া, আদনান ফারহাদ, গাজীপুরে শামীম মিসির,মাসুদ মোল্লা, বেলায়েত হোসেন, মানিকগঞ্জের রাকিব হোসেন, ফরিদপুরে ইলিয়াস হোসেন, মুরাদ আহমেদ, হেমায়েত উল্লাহসহ বিভিন্ন স্থানে নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারে নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বেতাদের মুক্তি দাবি করেন।
হবিগঞ্জে পুলিশি হামলায় গুলিবিদ্ধ জহিরুল হক শরীফসহ বিভিন্ন স্থানে আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপিমহাসচিব।
এর আগে বিকাল তিনটায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। বৈঠকেদলের মহাসচিব ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।