বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ নিয়ে ভারতের কোনো নেতা জেলে যাননি: জাফরুল্লাহ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘মোদি সাহেব বলেছেন— ১৯৭১ সালের বাংলাদেশেরমুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জেলে গিয়েছিলেন। তিনি কোন জেলে ছিলেন? উনি (মোদি) কি তখন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন? কোনোভারতীয় নেতা তো ৭১ সনে জেলে যাননি। উনি ৫০ বছর পর আজকে এ কথা আবিষ্কার করছেন।’
শনিবার (২৭ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ভাসানী অনুসারী পরিষদ’ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথাবলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে সারাদেশে বিক্ষোভে পুলিশেরগুলিতে হতাহতের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিরবক্তৃতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সত্যাগ্রহ করে জেলে গিয়েছিলাম’। তারবক্তব্য প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ এ কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মোদি বলতে এসেছেন এখানে (বাংলাদেশ) জঙ্গি আছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপকরার অধিকার তাকে কে দিয়েছে? সুতরাং এসব বিষয় থেকে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) সরে আসেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যেদিন সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল সেদিন আওয়ামী লীগের দুর্ধর্ষ নেতারা কোথায় পালিয়েগিয়েছিলেন, কোন ইঁদুরের গর্তে ঢুকেছিলেন? তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। একমাত্র কাদের সিদ্দিকীই প্রকাশ্যে প্রতিবাদেএসেছিলেন। আমি তখন লন্ডনে, আমার অজান্তেই চোখের পানি ঝরেছিল।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যাদের ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছেন সেই হেফাজতওআজ প্রতিবাদ করছে। আপনার পার্টির লোকেরাও আপনার সামনে এসে কথা বলতে ভয় পায়, তবুও তারা প্রতিবাদ করেছে।কিভাবে? আপনি স্মরণ করুন— ১৭ মার্চ। আপনার মহান পিতার জন্মদিবস। সেদিন আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় শাল্লাতেসংখালঘুদের বাড়ি–ঘরে হামলা হয়েছে। তারা সংখালঘুদের ওপর অত্যাচার করেনি, তারা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে, মোদিকে আমন্ত্রণ একটি ভুল কাজ।’
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ একটা সমাবেশ। পুলিশ ভাইদের কাজ হলো শান্তি রক্ষা করা। এখানে কোনোউশৃঙ্খল জনতা নেই। আপনারা আইনশৃঙ্খলার জন্য চুপচাপ দাঁড়ায় থাকেন। আপনারা এখান থেকে কাউকে ধরে নিয়ে যাবেননা। প্রতিবাদ করা আমাদের মৌলিক অধিকার।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির(মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধাশেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ বক্তৃতা করেন।