স্বৈরতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ না করলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না: দুদু
তরুণ ছাত্রনেতারা উজ্জীবিত না হলে, স্বৈরতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ না করলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপিরভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু।
বুধবার (২৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচারী এরশাদেরঅবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কালো দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২৪ মার্চ গণতন্ত্র হত্যার একটা দিন। আমরা যারা সে সময়ে ছাত্রনেতা ছিলাম তারা এটার বিরোধিতাকরেছি, মিছিল করেছি। অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর আগে ছাত্রদল সবার আগে এর বিরুদ্ধে দেশের প্রতিটি স্কুল–কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ করেছে। এগুলো ইতিহাসের বিষয়। আপনারা ইতিহাস ঘাঁটলে এগুলো পাবেন। তবে আমার মনে হয়, গত৫০ বছরে ছাত্র আন্দোলনে যেমন গৌরবময় ভূমিকা আছে ঠিক তেমনি যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, গণতন্ত্রের সাংবিধানিক ধারাহত্যা করেছে এই মাটিতে তাদের কখনো বিচার হয় নাই। কখনও, কোনো সময়েই গণতন্ত্র হত্যাকারীকে কোনো দল, কোনো ব্যক্তি, কোনো সরকার কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারেনি। এটাই সবচেয়ে ব্যর্থতার একটি দিক।’
বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণতন্ত্রপ্রতিষ্ঠা করতে যা যা করা দরকার তিনি করেছিলেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, বিচারালয়ের স্বাধীনতাফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্র হত্যাকারীদের তিনি বিচার করতে পারেননি। ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের পরে নির্বাচনের মাধ্যমেবেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেন। তিনি ও গণতন্ত্র হত্যাকারীদের বিচার শেষ করতে পারেননি। যারা ১৯৮২ সালের ২৪মার্চ গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। অস্ত্রের মুখে বিচারপতি ছাত্রকে অপহরণ করেছিল। তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার শেষকরতে পারেননি।’
কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ‘১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ যে শুধু একা গণতন্ত্র হত্যা করেছেএটা ঠিক না। তার সহযোগী ছিল। রাজনৈতিক সহযোগী ছিল। সামরিক ও রাজনৈতিক সহকারীরা সেদিন গণতন্ত্র হত্যাকরেছিল। তারাই মিলেমিশে কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন।’
বর্তমানে ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে সামরিক–বেসামরিক লোকদেরকে নিষ্পেষণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন দুদু।
তিনি বলেন, ‘এই মঞ্চ হতে হবে তরুণদের, বর্তমান ছাত্রনেতাদের। যারা স্বৈরশাসককে উৎখাত করে আশার প্রদীপ জ্বালাবে সেইতরুণ ছাত্রনেতাদেরকে উজ্জীবিত হতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে এবং চ্যালেঞ্জ করতে হবে স্বৈরতন্ত্রকে। তাহলে দেশে গণতন্ত্রমুক্তি পাবে। আর তা না হলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা আরও দীর্ঘদিন লিখিত বিবৃতি এবং বক্তৃতার মধ্য দিয়ে যাবে। এর বেশিপাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামআলমগীর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।