শ্রীলঙ্কায় মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য অ্যামনেস্টির উদ্বেগ
শ্রীলঙ্কায় বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্রমাগত একপেশে করে ফেলার প্রবণতায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। দেশটিতে মুসলিমরা অব্যাহতভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেওউল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি। সম্প্রতি তারা ‘ইনক্রিজড মার্জিনালাইজেশন, ডিসক্রিমিনেশন অ্যান্ড টার্গেটিং অব শ্রীলঙ্কাস মুসলিমকমিউনিটি’ শীর্ষক ৭ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্টে এসব কথা উল্লেখ করেছে।
ওই রিপোর্টের শিরোনামের বাংলা করলে এমনটা দাঁড়ায়– শ্রীলঙ্কার মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্রমবর্ধমানভাবে একপেশে করে ফেলাহচ্ছে, তাদেরকে টার্গেট করে বৈষম্য করা হচ্ছে। এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৯ শে মার্চ প্রকাশিত ওই রিপোর্টে শ্রীলঙ্কাসরকারের ৪টি নতুন প্রস্তাব ও রেজুলেশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়েছে, এগুলো সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়কেটার্গেট করে প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে
(১) বোরকা ও নেকাব নিষিদ্ধে মন্ত্রীপরিষদে প্রস্তাব।
(২) মাদ্রাসা বন্ধে মন্ত্রীপরিষদে প্রস্তাব।
(৩) শ্রীলঙ্কায় যাওয়া সব ইসলামি বইপুস্তক অবশ্যই যাচাই করে দেখা এবং
(৪) সহিংস উগ্রপন্থি আদর্শ থেকে ফেরাতে নতুন রেজুলেশন।
শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৯ ভাগ মুসলিম। সেখানে এরই মধ্যে করোনায় মারা যাওয়া মুসলিমদের মৃতদেহ জোরকরে পুড়িয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মুসলিম বিরোধী সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি।তারা বলেছে, এসব ঘটনা বলে দেয় যে শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপের ঝুঁকি রয়েছে।
তারা বলেছে, গত ১৩ই মার্চ জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী শরত বীরাসেকারা ঘোষণা করেছেন যে, পুরো মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ করাবিষয়ক মন্ত্রীপরিষদের একটি প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এর ফলে সেখানে বোরকা ও নেকাব নিষিদ্ধ হবে। এর ফলে যেসবনারী বোরকা ও নেকাব পরেন তাদেরকে টার্গেট করা হবে এবং একপেশে করে ফেলা হবে। এসব মুসলিম নারী তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসথেকে মুখ ও শরীর ঢেকে রাখেন। ফলে যেসব মুসলিম নারী বোরকা ও নেকাব পরে বাইরে যেতেন, তারা এখন আর প্রকাশ্যেযাবেন না। ঘরেই অবস্থান করবেন। কাজে যেতে সক্ষম হবেন না।পড়াশোনা অথবা মৌলিক সেবা নিতে পারবেন না। এর মধ্যদিয়ে তাদের অধিকারকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই নিন্দনীয় পদক্ষেপ বাতিল করতে শ্রীলঙ্কা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেঅ্যামনেস্টি।
ওই মন্ত্রী আরো বলেছেন, দেশের নিরাপত্তার জন্য জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে কমপক্ষে ১০০০ মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ারপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, এসব মাদ্রাসা বাইরে থেকে পরিচালনা করা হয়।
অ্যামনেস্টি বলছে, যদি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় তাহলে ধর্মীয় দিক থেকে অবশ্যই বৈষম্যের শিকারে পরিণত হবেন মুসলিমরা।এর ফলে ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন করা হবে।