করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার এখনও উদাসীন: ড. মোশাররফ

0

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করলেও বাংলাদেশের সরকার এখনও বিষয়েউদাসীন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য . খন্দকারমোশাররফ হোসেন।

তি‌নি বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাবধানতা অবলম্বন করছে না। ভারতের লকডাউন দেয়াহচ্ছে, ইউরোপেও দেশে দেশে লকডাউন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সরকার। কারণ, তাদের সামনেকিছু অনুষ্ঠান রয়েছে। যেখানে সংক্রমণের হার এর নিচে নেমে এসেছিল, সেখানে সংক্রমণের হার গতকাল সোমবার ১০ এরউপরে উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি দল আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘গত বছর মার্চ দেশে করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। শুরুতে কিন্তু সরকার এই করোনাপরিস্থিতিকে এভোয়েড করেছিল তাদের একটি জাতীয় প্রোগ্রামকে সামনে রেখে। কিন্তু সেই প্রোগ্রাম হয় নাই। তখন সরকারের পক্ষথেকে অনেকেই বলেছেআমরা প্রস্তুত কিন্তু যখন টেস্ট করা শুরু হল তখন একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান আইডিসিআরকে পাওয়া গেল।টিকা ক্রয়েও একই অবস্থা। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার টিকা সংগ্রহ করেছে। বিকল্প চেষ্টা নেই। অথচ সারা বিশ্ব একাধিকসোর্স থেকে টিকা ক্রয় করেছে। ইউরোপ যে দামে টিকা ক্রয় করেছে তার থেকে দ্বিগুণ দামে বাংলাদেশ ক্রয় করেছে। সরকারেরনানা অবহেলার কারণে আজকে আবার করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা পৃথিবীতেই এটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই করোনা তার চরিত্র বদলকরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা পৃথিবী ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাবধানতা অবলম্বন করছে না।

করোনা বিষয়ে সরকার এখনও উদাসীন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটা যখন বাড়বে তখন বাড়তেই থাকবে। আমরা মনে করি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিহত করার বিষয়ে সরকার এখনও উদাসীন। যে কর্মকান্ডগুলো করা দরকার তার একটাও তারা করছেনা।

তিনি বলেন, ‘এই সময় আমরা দেখতে পাচ্ছি বিদেশ থেকে মেহমানরা বাংলাদেশে আসছে। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় তারাআসছেন। গত বছর মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা ছিল। তখন তিনি বলেছিলেন করোনার কারণে তিনিআসবেন না। গত বছর মার্চ মাসে করোনা সংক্রমণ মৃত্যুর যে হার ছিল এবছর এখন তারচেয়েও অনেক বেশি। তারপরও যেবিভিন্ন দেশের নেতারা আসছেন এজন্য তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই।

বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের আগমনে সকল রাজনৈতিক সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেনবিএনপি এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘কেন এটা করা হয়েছে। সরকারপ্রধানরা অতীতেও বাংলাদেশে এসেছে। আমরা বলেছি এই খবরগুলিসরকারপ্রধানরা যদি জানেন, তাদের আগমন উপলক্ষে জনগণকে দুর্ভোগকে ফেলা হচ্ছে, তাহলে তারা লজ্জিত হবেন।

এসময় তিনি ১০ দিন যাবত সকল রাজনৈতিকসামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানজানান।

তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে বহুদিন যাবৎ আলাপআলোচনা চলছে। গতবারযখন দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলাপআলোচনা হল তখন এই তিস্তা চুক্তির বিষয়ে এজেন্ডাও ছিল না। দুই সরকার থেকেই বলাহয়েছে যে এটা এজেন্ডায় ছিল না। ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বলা হল, আমাদের তো কোনও আপত্তি নাই, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেররাজ্য সরকার এতে রাজি হচ্ছে না। এখন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ১০ বছর আগে নাকি এই তিস্তা চুক্তির পাতায় পাতায়সই হয়ে রয়েছে। এখন জনগণের পক্ষ থেকে আমাদের জিজ্ঞাসা, আপনারা তো ১০ বছর ধরে ক্ষমতায়, আর আজকে যে বললেন১০ বছর ধরে পাতায় পাতায় স্বাক্ষর হয়ে রয়েছে, তাহলে এর পেছনে কী রহস্য? বিষয়টা কেন আপনারা জনগণের সামনে তুলেধরলেন না। যদি পাতায় পাতায় সই হয়ে থাকে তাহলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর সম্পাদন শেষ হবেএবং জনগণের কাছে তা প্রকাশ করা হোক।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপকসুকোমল বড়ুয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com