‘৭ই মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার দাবিতে উন্মুখ জনতার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা: রিজভী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণে ‘ক্ষমতার দর কষাকষি’ থাকলেও তাতে স্বাধীনতার কোনও উদ্দীপনা ছিল নাবলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল রিজভী।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেয়া সেই ভাষণ প্রসঙ্গে রিজভী বলেছেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ কি স্বাধীনতাযুদ্ধের কোনওআওয়াজ? এটাতো হচ্ছে দর কষাকষি। আপনি (পাকিস্তান) ক্ষমতা দিন না হলে আমি কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণা করবো, সেইভাষণে এমনই দর কষাকষি ছিল। সারা পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে আপনি (শেখ মুজিব) প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, এটাস্বাভাবিক। কারণ আপনার দল জিতেছিল, এটা অন্যায়ের কিছু না। ৭ মার্চের ভাষণে আপনি যে কথা বলেছেন সেই কথাটা নিয়েআজকে আওয়ামী লীগ বলছে, এর মধ্যেই ছিল ‘স্বাধীনতার সুর’। অথচ এটা হচ্ছে পাকিস্তানের সাথে বার্গেডিং, সম্পূর্ণরূপেবার্গেডিং।’
রিজভী আরও বলেন, ‘৭ মার্চ তিনি (শেখ মুজিব) ভাষণ দিয়েছেন বেশ উদ্দীপনাময়, কিন্তু সেই ভাষণে তো স্বাধীনতারউদ্দীপনার কথা নেই। পাকিস্তানে তিনি সরকার গঠন করবে সেই কথাটাই রয়েছে। তার বাইরে কিছু নেই। এটা নিয়ে যারা কথাবলছেন তারা আত্মপ্রবঞ্চক, আত্মপ্রতারক।’
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচ তলায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসবকথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারসহবিএনপির সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দের রোগমুক্তি কামনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলেরআয়োজন করে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার দাবিতে উন্মুখ জনতার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা। আপনি (শেখ মুজিব) সুস্পষ্টভাবে স্বাধীনতার কথা বলেননি। বরং আপনি বলছেন ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা। এ ভাষণে জনগণকে কোনও ডিরেকশনদেয়া হয়নি। যে তোমরা যাও আমরা এখন থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়বো। তাদের সাথে আমাদের আর কোনও কথা নেই।তারপরও আপনি তাদের সাথে দিনের পর দিন আলোচনা করেছেন। ভুট্টোর সাথে আলোচনা করেছেন। এরপর ২৩ মার্চইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা করেছেন। আলোচনা শেষে বলেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। ওই আলোচনাগুলো কী? ওটা কিবাংলাদেশের স্বাধীনতার আলোচনা, নাকি ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা। এটাতো স্পট করে বলেন নাই। ওটাতো ক্ষমতাহস্তান্তর। ইয়াহিয়া খান একবার বলেছে যে, ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। এই যে বার্গেডিংটা এর মধ্যে স্বাধীনতারকোনও সুস্পষ্ট কথা নেই। নেই বলেই তাদের (আওয়ামী লীগ) মধ্যে এতো জ্বালা।’
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে ভিলেন বানানোর কত চেষ্টা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কী ব্যাপার তুমিস্বাধীনতার ঘোষণা করলে কেন? এজন্য আজ আওয়ামী লীগের এতো ক্ষোভ, এতো জ্বালা। এজন্যই তারা আজ নতুন নতুন‘তত্ত্ব’ দেয়। এবার বলছে, ২৫ ও ২৬ মার্চ যারা ব্যারিগেট দিয়েছেন তাদেরকে নাকি গুলি করে হত্যা করেছেন জিয়াউর রহমান।আপনার (শেখ হাসিনা) বাবাইতো কোনও নির্দেশনা দেননি।’
করোনার টিকা প্রসঙ্গে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ভারত সরকার বাংলাদেশে যে টিকা দিয়েছে তা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবেসন্দেহের তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স বলেছিলো এই টিকা পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে বাংলাদেশে। অর্আৎ এটিকা নেয়ার পর আমরা কত লোক মারা যাচ্ছি, কত লোক অসুস্থ হচ্ছি এটা আগে ভারত দেখবে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেবে।ভারতের এ টিকা থাইল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। ওটা তো ছিলো অক্সফোর্ডের তৈরি, আর আমাদের যেটা দিয়েছেসেটা তো ভারতের। যেটা উৎপাদন করেছে ভারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, আমি যেহেতু এ টিকার বিরোধিতা করেছি, যোক্তিকভাবেই করেছি।আমি এ টিকা নেবো না। আজকে প্রমাণিত হলো এ টিকার কার্যকারিতা নেই। এ টিকা মরণঘাতি, এ টিকার বিরুদ্ধে সারা দুনিয়াধিক্কার দিচ্ছে।’
এসময় আরএ উপস্থিত ছিলেন– বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপিরস্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ওলামা দলেরআহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক ও সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।