জনগণের কাছে সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরব: ড. মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনবলেছেন, ‘আমরা বছরব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কর্মসূচি করে জনগণের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরব। আমাদের বার্তা? এই বার্তা যে, মুক্তিযুদ্ধের মূল ইতিহাস, সত্যিকার ইতিহাস।’
শনিবার (১৩ মার্চ) সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে চিকিৎসা ও সেবা কমিটির এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশে শুধু একটি দল ক্ষমতায় ফ্যাসিস্ট কায়দাটিকে থাকার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করছে বর্তমান প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্য।সেজন্য আমরা প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।’
আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধ এক কথা নয়, উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কি? অনেক স্বাধীনতার সংগ্রাম–আন্দোলন, স্বাধিকারের আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে এক করে এই প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে চায়। মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধএকটা সময়ে শুরু হয়, একটা সময়ে শেষ হয়। মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে যখন আক্রমণ করা হয় বাপ্রতিরোধ করা হয় অস্ত্রের সাহায্যে তখনই যুদ্ধ শুরু হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সেভাবে শুরু হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হায়েনা বাহিনী এদেশে গণহত্যা শুরু করেছে তখন কিন্তু রাজনীতিবিদদেরতাদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। সেই রাতে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন মেজর যিনি সাহসী এবং কিপরিমাণ দেশপ্রেমিক হলে তিনি সেদিন তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ২৫ তারিখ শেষ রাতে ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে রিভোল্টকরেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। একথা আমি যখন বলি যারা ইতিহাস বিকৃত করেন তারা এরপরিবর্তে বলেন, দেখি আর একজনের নাম যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আরেকজন রিভোল্ট করেছে জিয়াউর রহমানেরবাইরে আরেকজনের নাম বলতে পারেন কিনা। পারবেন না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ যারা ক্ষমতায় ’৭৫ সালে যেমনিভাবে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্র হত্যা করেছে তেমনিভাবেআজ তারা ১২ বছর ধরে গণতন্ত্রকে হত্যা করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজ অর্থনীতি ঠিক একইভাবে লুট হচ্ছে, ব্যাংক লুট হচ্ছে, শেয়ারবাজার লুট হচ্ছে..। হেন কোনো অপকর্ম নেই, হেন কোনো খারাপ কাজ নেই এখন হচ্ছে না।’
আওয়ামী লীগ তাদের দুর্বলতাকে ঢাকার জন্য প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে তিনিবলেন, ‘যদি আমরা ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যায়।বিএনপি সব ক্ষেত্রে দেখা যায় সফলতা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এ গণতন্ত্রের আন্দোলন, অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে, সামাজিক সাম্যের আন্দোলন এবং রাজনৈতিক সাম্যের আন্দোলনে সব ক্ষেত্রে যদি আমরা প্রকৃত ইতিহাস আজ তুলে ধরিতাহলে আওয়ামী লীগ সেখানে ব্যর্থ, বিএনপি সেখানে সফল। সেজন্য আওয়ামী লীগ বিএনপির নাম শুনলে, শহীদ রাষ্ট্রপতিজিয়াউর রহমানের নাম শুনলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম শুনলে, তারেক রহমানের নাম শুনলে তাদের গাত্রদাহ শুরুহয়, কম্পন শুরু হয়।
চিকিৎসা ও সেবা কমিটির সদস্য ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ড্যাবেরসভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।