আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনি: ফখরুল
সরকারের পেছনে ‘ভয়ংকর একটি শক্তি’ অবস্থান নিয়ে ভিন্নমতের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জাফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘‘আজকের পত্রিকা খুললে দেখবেন যে, কাটুনিস্ট কিশোর জেল থেকে বেরিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে, সেই বিবৃতিতে বুঝাযায় যে, ভয়ংকর একটা শক্তি পেছনে থেকে, এই সরকারের আড়ালে থেকে, সরকার স্ক্রিন তৈরি করেছে, সেই ক্রিনে থেকে যারাইএই সরকারের বিরোধিতা করছে, যারাই রাষ্ট্র প্রধানের বিরোধিতা করছে, যারাই সরকার প্রধানের বিরোধিতা করছে তাদেরকেনিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য অমানবিক নির্যাতন করছে।”
শনিবার (৬ মার্চ) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আপনারা দেখেছেন যে, মুশতাক আহমেদ শুধুমাত্র লেখার অপরাধে আর কিশোর কার্টুন আঁকারঅপরাধে নির্মম অত্যাচার করে ছয়মাস আটক করে রাখা হয়েছে। এরা তো দুইজন শুধু ছয় মাস তাদের কথা বলা যায়..।গতকালই একজন মহিলা এসেছিলেন আমার কাছে, তিনি একজন রিটায়ার্ড মেজর মোরসালীন তার স্ত্রী–একবছর ধরে এইমোরসালীন আটক আছে জেলের মধ্যে। তার কোনো খবর বাইরে দিতে চায় না। কারণ একটাই তিনি (মোরসালীন) লিখতে, তারলেখার কারণে তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আজকে পত্রিকাতে আছে যে, কত মানুষকে, শিশুকে সাত বছরের শিশু, কতবয়োঃজ্যেষ্ঠদের তুলে নিয়ে গেছে, জেলে নিয়ে গেছে শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করার অপরাধে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে স্বাধীনতার চেতনা সম্পূর্ণ ভুলন্ঠিত, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবেদলীয়করণ করেছে, এই রাষ্ট্রকে একটা দলীয়করণের রাষ্ট্র, একটা অকার্য্কর রাষ্ট্র, একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।”
তিনি বলেন, ‘‘আজকে বাংলাদেশকে এরা একেবারে ঘাঘারে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের আত্মাকে ধবংস করে দিয়েছে, সোলঅব বাংলাদেশ, গণতন্ত্র যেটা আমাদের আত্ম সেই আত্মাকে ধবংস করে দিয়েছে।এরা শুধু মাত্র নিজেদের ক্ষমতা, দাম্ভিকতা, আত্মভরিতা আর দুর্নীতির বৃত্ত তৈরি করার জন্য তারা গোটা জাতিকে তারা ধবংস করে দিচ্ছে।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘‘আমরা যারা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের এখন প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরন হয়–এজন্য কীআমরা দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম। যেন আমার সন্তান সে একটা সুস্থ পরিবেশে মানুষ হতে পারবে না, আমরা ভাই সে একটাসত্য কথা উচ্চারণ করতে পারবে না, আমার বোন সে নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না, আমার মা সে তার সন্তানকেএকটু ভালোভাবে দেখতে পর্যন্ত পারবে না, আমাদের যে নতুন শিশু আসছে সেই শিশু কোন জগতে বাস করবে, কোন জনপদেবাস করবে যেখানে শুধু হত্যা–হিংসা–ভয়াবহতা।”
‘‘এই দেশে বারে বারে এধরনের স্বৈরাচার এসেছে, এদেশে বার বার যেমন মগ–দুস্যরা, বর্গীরা এসেছে, পশ্চিম থেকে বৃটিশরাএসেছে দখল করে নিয়েছে, তেমনি এদেশেরই তরুন দামালেরা, যুবকরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনে অস্ত্র নিয়ে তাদেরসরিয়ে দিয়েছে। ১৯৭১ সালে সেই অস্ত্র হাতে নিয়ে আমাদের তরুণেরা, দামাল ছেলেরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিতাড়িতকরেছে। সেই কথা মনে আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে,” যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে যদি আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে চাই, আমরা যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি শুধুমাত্রগণতন্ত্রের জন্য কারাবন্দি হয়ে আছেন তাকে বের করে আনতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমান যাকে সামনে রেখে আমরাপথ এগুতে চাচ্ছি তাকে যদি দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করাতে চাই, প্রতিদিন আমাদের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে তাদের যদি জেল থেকে মুক্ত করতে চাই আমাদেরকে অবশ্যই তরুনদেরকে, যুবকদেরকে তাদেরকেই সামনে আসতে হবে। সব সময় তরুনরা সব কিছু পাল্টিয়ে দিয়েছে, পরিবর্তন এনেছে।”
‘‘আমাদের দিকে সবাই তাঁকিয়ে আছে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানবকে পরাজিত করি।আমাদের বাংলাদেশকে তারা লুটে নিয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতেহলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনি,” বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে বাংলাশে ছাত্র ফোরাম ও উত্তর ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগেবিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৪তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।