মুজাক্কির হত্যায় ওবায়দুল কাদের ও কাদের মির্জাকে গ্রেফতারের দাবি সাংবাদিক নেতাদের

0

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের খুনিরা পাঁচ দিনেও গ্রেফতার না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে খুনের দায়ে ওবায়দুল কাদের ও কাদের মির্জাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। এ সময় মুজাক্কির শাসকদলের ওই দুই নেতার অনুসারীদের অস্ত্রবাজীর বলি হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন নেতারা।

বুধবার বিএফইউজে ও ডিইউজে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, খুনিরা শাসকদলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বলেই গ্রেফতারে টালবাহানা চলছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রীর অনুসারী বা পরিবারের সদস্য বলে খুনিরা যদি পার পেয়ে যায় তবে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সন্ত্রাসের লালনকারী নেতাসহ আসামি করে মামলা করা হবে, বিচারের মুখোমুখি করা হবে ইনশাআল্লাহ।

এ সময় নেতৃবৃন্দ সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনেরও দাবি জানান।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে বুধবার সকাল ১১টায় তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও বিএফইউজের কাউন্সিলর এইচ এম আল-আমীনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ডিইউজের সহ-সভাপতি বাছির জামাল, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য এ কে এম মোহসীন, নির্বাহী সদস্য জিয়াউর রহমান মধু, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবুল কালাম, জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য ও সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ডিইউজের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এম এ নোমান, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য মো: আবদুল হালিম, জেসমিন জুঁই, সাবেক নির্বাহী সদস্য জসিম মেহেদী, সদস্য ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে শওকত মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক মুজাক্কিরকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সরকারি দলের শীর্ষ নেতা ওবায়দুল কাদের ও তার ভাইয়ের অনুসারীরা গোলাগুলি করেছে। অতএব তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করলেই খুনীরা শনাক্ত হবে।

তিনি বলেন, এ সরকারের সময় একের পর এক সাংবাদিক খুন হচ্ছেন, কিন্তু খুনের বিচার হচ্ছে না। কারণ সরকার গণমাধ্যম ও সাংবাদিক দমনের নীতি গ্রহণ করেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যমের শত্রু ক্ষমতাসীন সরকারের এক যুগে মুজাক্কিরসহ ৪২ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। মুজাক্কিরকে প্রকাশ্য দিবালোকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। শাসকদলের দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের অস্ত্রবাজীর ভিডিও ধারণ করার সময় সরাসরি গুলি করে তার গলা ও বুক ঝাঁজরা করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশের সিসিটিভি ফুটেজ অস্ত্রধারীর চেহারা ধরা পড়েছে। ওই ফুটেজ পুলিশ নিয়ে গেছে। কিন্তু খুনিকে পাঁচ দিনেও গ্রেফতার করেনি। এমনকি নাম উল্লেখ করে মামলা পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। কারণ খুনি অস্ত্রবাজদের আশ্রয়দাতা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ক্ষমতাধর।

এ সময় বিএফইউজে সভাপতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এ সরকার শেষ সরকার নয়। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে খুনিদের সাথে আশ্রয়দাতাদেরও বিচার হবে ইনশাআল্লাহ। মুজাক্কিরের খুনিরা রেহাই পাবে না।

নুরুল আমিন রোকন বলেন, সংবাদমাধ্যমকে ভয় পায় বলেই হত্যা, নির্যাতন করে সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে গদি রক্ষা করতে চায়। সাংবাদিক সমাজ ভয়কে জয় করে দুঃশাসনের পতন ঘটাবে।

এম এ আজিজ বলেন, সরকার চাইলে প্রচার করতে পারতো যে মুজাক্কির ক্রসফায়ারে মৃতবরণ করেছে। তার কলমকে অস্ত্র হিসাবে দেখাতে পারতো।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, এ সরকারের বিদায় ছাড়া মুজাক্কির হত্যার বিচার পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। তাই সরকারের পতন আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নাসিম শিকদার, বিএফইউজের কাউন্সিলর বুলবুল আহমেদ, শিকদার আলমগীর, মোহাম্মদ মাসুদ, এমরান হোসাইন, মিয়া আবদুল হান্নান, বিপ্লব শিকদার, মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, পাভেল আলমাজি, আবদুর রহীম তালুকদার, সবুজ শিকদার, গোলাম মাওলা, এনামুল ইসলাম তুহিন, ডিইউজে সদস্য জিয়াউর রহমান ও মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com