‘নৌকার ভোটটা আমরা ওপেন দিয়া লাইতো চাই’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে উঠান বৈঠকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেনের এক বক্তব্য নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটি এক সপ্তাহ আগের একটি নির্বাচনী উঠান বৈঠক থেকে ধারণ করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি নৌকায় ‘ওপেন ভোট’ দিয়ে জিতিয়ে আনার আনতে বৈঠকে প্রস্তাব করেন।
বক্তব্যে লোকমান হোসেনকে আঞ্চলিক ভাষায় বলতে শোনা যায়, ‘মেম্বারের (কাউন্সিলর) ভোট যেন আমরা দিতারি, হেই ব্যবস্থা কইরা দিবা, আর নৌকার ভোটটা আমরা ওপেন দিয়া লাইতো চাই। যদি আমরা উন্নয়নে বিশ্বাস করি, এর আগেও এমন হইছে। নৌকার ভোটটা যেন সবাই দেলা। আর ওই ভোটটা (কাউন্সিলর) গোপনে হইলেও আমাদের কোনো আপত্তি নাই।’
এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত জানিয়ে বক্তব্যে আরও বলেন, ‘মেম্বারা (কাউন্সিলর) মধ্যে ডেক্কাডেক্কি (ধাক্কাধাক্কি) করলে আমরার নৌকা পিছে পইড়া যাইবগা। আমি একটা মত বা প্রস্তাব দিয়া যাই, আমরা নৌকাটারে নিশ্চিত করতে কাউন্সিলদের মধ্যে এমন ঐক্য করা যায় কিনা। আমাদের নেতা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। কাজিপাড়ার মানুষদের তিনি ভালবাসেন, সম্মান করেন। তিনি দায়িত্ব দিছে মন্টু ভাইকে (জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক)। উনার দিকে তাকাইয়া আগামী ২৮ তারিখ আমরা কাজীপাড়ার মানুষ দল মত নির্বিশেষে নৌকা প্রতীকে জয়ী করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী মিসেস নায়ার কবিরকে জয়ী করতে পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডে এক উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন এ বক্তব্য দেন। এসময় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সকল প্রার্থীরা ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ও এর বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাজীপাড়ায় ৮নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী অনেক। আমরা ২০/২৫ জন নিয়ে এলাকায় আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে স্থানীয় বিএনপির এক নেতা প্রস্তাব তোলেন- নৌকার ভোট ওপেন হতে এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট যেন গোপনে হয়। এই প্রস্তাব আমি উপস্থাপন করি এবং এতে আমার সমর্থন ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়টি (নৌকায় ওপেন ভোট) অনেক সভায় ওপেন (খোলামেলা) আলোচনা হচ্ছে। বড় বড় নেতারা বললে কোনো দোষ নেই। এখন আমি বলাতে দোষ হয়ে গেল?’