ভারত সরকার অবৈধ সরকারকে ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে: জেনারেল ইবরাহিম

0

বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি অংশ নেবে না। দলটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এমন পরিবেশ-পরিস্থিতি দেশে তৈরি হয়নি। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই। এজন্য এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নতুন করে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তবে সেটি ‘৯৬ বা ২০০১ সালের মত হতেই হবে এমন নয়। কোন ধরনের নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে এখন থেকেই আলোচনা শুরু হওয়া দরকার। জেনারেল ইবরাহিম বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে যাতে নির্বাচন না হয় সেজন্য কল্যাণ পার্টি যেকোন বৈধ কর্মসূচী গ্রহণ করবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কল্যাণ পার্টির উদ্যোগে মহাখালি ডিওএইচএস এ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ-ভারত সাম্প্রতিক সম্পর্ক’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, এনডিপির সভাপতি ক্বারী এম এ তাহের, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নুরুল কবির ভুঁইয়া পিন্টু, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) কামাল আহমেদ, কর্নেল আব্দুল হক ও ড. বদরুল আলম সিদ্দিকী, ভাইস-চেয়ারম্যান মাহমুদ খান প্রমূখ।

মেজর জেনারেল ইবরাহিম বলেন, ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে থাকে। এ বিষয়টি সরাসরি না হলেও তাদের কর্মকান্ডেই তার প্রমাণ রয়েছে। ২০১৪ সালে ভারতের তৎকালিন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে এসে জাতীয় পার্টির তৎকালিন চেয়ারম্যান এরশাদের সাথে বৈঠক শেষে এরশাদ নিজেই গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন সুজাতা সিং তাকে আওয়ামীলীগ সরকারের জোটে থাকতে বলেছে। নাহলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় চলে যাবে বলে তাকে তিনি জানান। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির লিখিত বই পড়লেও প্রমাণ হয় বাংলাদেশ নিয়ে ভারত অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ করছে। স্বাধীন দেশের মানুষ এ হস্তক্ষেপ মানবে না। ২০ দলীয় জোটের বাইরে কল্যাণ পার্টি ভবিষ্যতে নতুন কোন জোট করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে কল্যাণ পার্টি কখন কি করবে।

লিখিত বক্তব্যে হাসান নাসির বলেন, দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে পারস্পরিক আদান-প্রদানই মূলকথা। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে আমরা সেটা দেখতে পাইনা। এক্ষেত্রে একতরফা ভালোবাসা দেখতে পাই, যেখানে ভারত শুধু নিতে চায়, দিতে চায় না। বস্তুতপক্ষে তারা চায় একতরফা সম্পর্ক। একদিকে ভারত, সীমান্তে দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে। কাঁটাতারের বেড়ার সাথে ঝুলছে ফেলানীর লাশ। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করতে হলে কাঁটাতারের কাঁটার আঘাত বুকে নিয়ে, ফেলানীদের লাশ ডিঙিয়ে, সীমান্ত হত্যার শিকার অগনিত বাংলাদেশির রক্ত পেরিয়ে ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করতে হচ্ছে। ভারত এদেশের পুতুল সরকারের সাথে বন্ধুত্বের মাধ্যমে, সেই অমানবিক বন্ধুত্ব মেনে নিতে বাংলাদেশের মানুষকে বাধ্য করার চেষ্টা করছে। বিনিময়ে ভারত সরকার এদেশে রাতের ভোটের অবৈধ সরকারকে ক্রমান্বয়ে অধিকতর শক্তিশালী হতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে কোনো সম্পর্কও হয় না বা বন্ধুত্বও হয়না। যেটা হয়, সেটা কথিত ‘দাদাগিরি’। আমরা সে দাদাগিরির আশু অবসান চাই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com