বাংলাদেশের মালিক জনগণ: বিএনপি
জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সেই হাত পুড়ে ছাই হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সোমবার দুপুরে এক বিক্ষোভ সভায় এই হু্শয়িারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সেই হাতে ফুসকা ফুটবে, আগুনে পুঁড়ার মতো ছাঁই হয়ে যাবে। এরা যে কত বড় একটা মহা কলঙ্কের তিলক নিজেদের কপালে আঁকার চেষ্টা করছে- এখনো বুঝছে না।”
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আল জাজিরার এক প্রতিবেদনেই এই সরকারের প্যাথলজি টেস্ট হয়ে গেছে। সরকারের আর সময় নেই।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘এই দেশটা প্রজাতন্ত্রের, সেই প্রজাতন্ত্রের নাম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মালিক জনগন। সেই জনগনের মালিকানা ফেরত আনার জন্যই আমাদের আগামী দিন পথ চলতে হবে। তাতে বাঁধা আসবে, বাঁধা অতিক্রম করতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে। সেই গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, জিয়ার বাংলাদেশে জনগনের সামনে হাজির করতে হবে। এটাই হবে আমাদের জন্য বেস্ট রিভেঞ্জ। আমাদের অন্য কোনো প্রতিশোধ নাই। ইনস্টিড অব ডেমোক্রসি ইন দি বেস্ট রিভেঞ্জ ফর দি বিএনপি ফর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এন্ড অল অব দি পিপলস এজওয়েল এজ। আমরা সেই প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠি, গণতন্ত্রকে ফেরত আনি।”
সরকারের দমনপীড়নের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকার কঠোর সমালোচনা করে তাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হিসেবে ‘নিরপেক্ষ’ ভুমিকা পালনের আহবানও জানান তিনি।
প্রতিবেশী দেশের তল্পিবাহক সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক সরকারের সংঘা হলো, বাই দি পিপল, ফর দি পিপল, অব দি পিপল। আমি বছর ৭/৮ আগে বলেছিলাম যে, সি গর্ভামেন্ট নট বাই দি পিপল, নট ফর দি পিপল, নট বাই দি পিপল। দিস গর্ভামেন্ট বাই দি ইন্ডিয়া, ফর দি ইন্ডিয়া, অব দি ইন্ডিয়া।”
‘‘সুতরাং আজকে যা কিছুই হচ্ছে সে বিষয়ে ভারতের একটি অংশ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে না পেলেও মনের দিক থেকে তারা এই দেশটাকে শোষন করছে। শোষনের যে ক্ষেত্রস্থল তৈরি করার দায়িত্বটা শেখ হাসিনার নিয়েছেন। সেই কারণে বংশ পরমপরায় শেখ হাসিনা অর্থাত এই দলটি যেন তাদের খেদমতে সমসময় নিয়োজিত থাকতে পারেন সেজন্য তাদের একটা চেষ্টা আছে। জনগন তাদের সমর্থন করলো কি করলো না সেটা তাদের কাছে বড় বিষয় না।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের মানুষ জেলখানার মধ্যে না থাকলেও এক ধরণের অদৃশ্য একটা ভাব আছে। কে কখন গুম হয়ে যায়। আল জাজিরায় এক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সরকার ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা দিল্লি সফর করছেন। আসলে এই সরকারের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়। এভাবে করে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, কর্মসূচির কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমাদেরকে জায়গা দেবেন না। এই বিস্তৃত বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা জায়গা দেয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা লুঙ্গি পরে স্ট্যান গান নিয়ে ধান খেত, গম খেত, খালে-বিলে থেকে ওদেরকে প্রতিহত করেছে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘‘আপনারা প্রেস ক্লাবের সামনে হামলা করবেন, আপনারা পার্টি অফিসের সামনে হামলা করবেন, আপনারা রাজশাহীতে হামলা করবেন, আপনারা চট্টগ্রামে হামলা করবেন। আমাদেরও ধান ক্ষেত আছে, আমাদেরও খাল-বিল-নদীনালা আছে। প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের দূর্গ, সেই সব দূর্গ থেকে আপনাদেরকে মোকাবিলা করা হবে।”
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের নাগরিক নয় বলে নৌ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তাকে ‘বাকশিয়াল’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ঢাকা জেলার উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানরে বীর উত্তম খেতাবের বাতিলে সরকারি অপচেষ্টার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সভা হয়।
জেলা সভাপতি দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় বিক্ষোভ সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, তমিজউদ্দিন আহমেদ, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, যুব দলে গোলাম মাওলা শাহিন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।