অভ্যুত্থানে স্থগিত মিয়ানমার-নিউজিল্যান্ড সম্পর্ক
সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে নিউজিল্যান্ড। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স।
জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, সম্পর্ক স্থগিতের সঙ্গে শিগগিরই মিয়ানমার সেনা কর্মকর্তাতাদের নিউজিল্যান্ডে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। পাশাপাশি দেশটির সামরিক সরকার উপকৃত হয়, এমন সব ধরনের প্রকল্প স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আরডার্ন।।
নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা পৃথক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের বৈধতা স্বীকার করে না। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে আটক সব রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে অবিলম্বে দেশটিতে বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পার্লামেন্টে যাওয়ার দিনেই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে। ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতা অং সান সু চিসহ গ্রেফতার করা হয় দলের শীর্ষ নেতাদের।
২০১১ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরুর আগ পর্যন্ত অর্ধশতক মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শাসনেই ছিল। সে সময় দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দি করে রাখা হয় সু চিকে। গৃহবন্দি থাকাবস্থায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অহিংস লড়াইয়ের জন্য ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। এরপর তার দল এনএলডি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে ২০১০ সালে, মুক্তি পান সু চি।
২০১২ সালের উপনির্বাচনে ৪৫ আসনের মধ্যে ৪৩টিতে জয়ী হয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী হয় সু চির দল। এর পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে এনএলডি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। সেই সরকারের মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তার পর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কা করা হচ্ছিল।