জনগণের সব অধিকার আওয়ামী লীগ সরকারের সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে: রিজভী

“আমার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চলছে”- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে না। আপনার সরকারের ‘অপকর্ম ও অপশাসনের’ সমালোচনা করছে জনগণ। সেটা এখন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।’

‘শক্তিশালী বিরোধী দল’ চাওয়া নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। কারাগারে নিয়ে গেছেন।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করছেন। ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করছেন। আপনার বক্তব্য জনগণের সাথে ‘ঠাট্টা আর তামাশা’ ছাড়া কিছুই নয়। আপনি জনগণের ভোট কেরে নিয়েছেন, নির্বাচন কেড়ে নিয়েছেন, জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন।’

বুধবার (৩ ফেব্রয়ারী) নবাবগঞ্জের দোহার এলাকায় বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শক্তিশালী বিরোধী দল চাই’। তাঁর বক্তব্যে হাসি লাগে। জনগণ লজ্জা পায়। যে ব্যক্তি গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন তাঁর মুখে এসব কথা মানায় না। আমাদের ভোট সরকারের সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে। ভোট দেয়া যায় না। ভোট দেয়ার আগে প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট দিয়ে দেয়। এটাই হলো শেখ হাসিনার উপহার।’

তাঁর সরকার অনেক কাজ করছে এবং তাতে তিনি তৃপ্তি পাচ্ছেন- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির এ মুখপাত্র  বলেন, ‘আপনি কী কাজ করছেন? আপনার কাজ জনগণের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছায়নি। আপনি কাজে আপনার দলেরই মন্ত্রী-এমপি-নেতাকর্মীরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ মালয়েশিয়ায় বাড়ি কিনেছেন, এটাই আপনার তৃপ্তি। জনগণের কিছু হয়নি।’

রিজভী বলেন, ‘এই দোহার-নবাবগঞ্জে যতটুকু উন্নয়ন সেটা বিএনপির আমলে হয়েছে। আওয়ামী লীগ কিছুই করেনি, শুধু লুটপাট করেছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন বলতে ফ্লাইওভার। এসব করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। কোটি কোটি টাকা পাচার করছে। আওয়ামী লীগের এমপি পাপুল কুয়েতে টাকা পাচার করতে গিয়ে আটক হয়েছেন। তার সাজা হয়েছে।’

সরকারের নিপীড়ন নীতির সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্লজ্জ জুলুম, হামলা-মামলা অব্যাহত রয়েছে। আমরা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে আছি। সরকারের অত্যাচারের মধ্যে আছি। তারপরও জনগণ যখন বন্যা-খরায় কষ্ট পায়, তখন আমরাই জনগণের পাশে ছুটে যাই। কিছুদিন আগে নবাবগঞ্জে বন্যায় মানুষ কষ্ট ছিলেন, তখন খন্দকার আবু আশফাকের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ দিয়েছিল। এখনও শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে আবার আশফাকের নেতৃত্বে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। বিএনপি জনগণের পক্ষে, দরিদ্র মানুষের পক্ষে। নির্যাতিত দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই বিএনপির ধর্ম।’

রাষ্ট্রের বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কথা বললে আমাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। কথা বললে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে। মিছিল করলে আটক করা হবে। এতকিছু জুলুম সহ্য করেও আমরা বিএনপি নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি। জনমানুষের কাছ থেকে আমাদের সরানো যাবে না।’

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক এর উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজাদুর ইসলাম হাই, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবুল কালাম, দোহার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন বারোয়াখালী, শিকারীপাড়া এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণের সময় পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিএনপি নেতাকর্মীরা।