অবৈধ সংযোগে দুর্ভোগে বৈধ গ্রাহকরাও
সরকারিভাবে দেশে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও একটি সিন্ডিকেট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের বিভিন্ন বহুতল ভবনসহ প্রত্যন্ত এলাকায় অবৈধ সংযোগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে অবাধে। চোরাইভাবে গ্যাস ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ায় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় হাজার হাজার বৈধ গ্রাহক চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
গ্যাস সমৃদ্ধ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। দেশের জ্বালানি চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ হচ্ছে এখান থেকেই। অবৈধ গ্যাস সিন্ডিকেট চক্র সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতিনিয়তই গ্যাস সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে চোরাই গ্যাসের এ নেটওয়ার্ক। এই অবৈধ লাইন থেকে হাজার হাজার বাড়িঘরসহ বিভিন্ন বহুতল ভবনে গ্যাস সংযোগ দেয়া হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে বৈধ সংযোগ নেয়া গ্রাহকরাও। আবার এসব সংযোগ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন অফিস জানায়, তাদের ২৪ হাজার বৈধ গ্রাহক রয়েছে। অবৈধ গ্রাহক কি পরিমাণ আছে তার কোনো সঠিক তথ্য নেই তাদের কাছে।
গ্যাস সিন্ডিকেট চক্রটি বৈধ গ্রাহকদের সার্ভিস লাইনের সঙ্গে সংযোগ যুক্ত করে বিভিন্ন এলাকায় পাইপ বসিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে। এতে পৌর শহরের কাজীপাড়া, পুনিয়াউট, দাতিয়ারা, কলেজ পাড়া, বনিক পাড়া, কাউতলী, পাইকপাড়া, মেড্ডা, মধ্যপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা-৩টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। এতে বৈধ গ্রাহকদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
ভুক্তভোগী শিরিন আক্তার বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। গ্যাস না থাকার কারণে কোনো খাবারই তৈরি করতে পারি না। আমরা বিল দিচ্ছি ঠিকই কিন্তু প্রয়োজনের সময় গ্যাস পাচ্ছি না।
আরেক গ্রাহক শেফালী বেগম বলেন, সময়মতো গ্যাস না পাওয়ায় আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
জেলা সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাকের) সদস্য আব্দুর নুর বলেন, সরকারিভাবে নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি অসাধু চক্র তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মাইলের পর মাইল অবৈধ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের সদ্যবিদায়ী ডিজিএম জাহিদুর রেজা বলেন, আমরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অচিরেই অভিযান পরিচালনা করবো এবং বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করছি। এ সমস্ত অবৈধ সংযোগের কারণে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি জানান।