আওয়ামী লীগ নয়, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন করেছে: বিএনপি
আওয়ামী লীগ নয়, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনই তো হয়নি, ফল প্রত্যাখ্যানের কী আছে। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে নির্বাচন করলে বলা যেত নির্বাচন হয়েছে। এজেন্ট বের করে দেওয়ার মূল কাজটি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির নগর কার্যালয়ের সামনে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ।
বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন জয়ী হয়ে গেলে কী করবেন, জানতে চাইলে আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।’ নির্বাচন বর্জন বা ফল প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ অভিযোগ করেন, বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ৫০০ কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপরও হামলা হয়েছে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর হাত ভেঙে দিয়েছে। অনেক প্রার্থীকে মারধর করেছে। ভোট ডাকাতির সঙ্গে চরম নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। আর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের তাঁবেদার হিসেবে কাজ করেছে।
এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, এটি আর প্রমাণ করার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার হওয়ার পরও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি নির্বাচন করেছে। এ অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ তাহলে এটি বিএনপির শেষ নির্বাচন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আরও বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর ২০টি মামলা দিয়ে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখনো বাড়ি ফিরতে পারছেন না নেতা-কর্মীরা। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে হালিশহরের ওসি নিজে সব কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়েছে।’
ইভিএম নিয়ে অভিযোগ করে আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মক (পরীক্ষামূলক ভোট) ভোটের নামে ইভিএমে জালিয়াতি করা হয়েছে। আগে রাতে ব্যালটের ভোট চুরি করেছে। এবার ইভিএমেও রাতে ভোট চুরি করেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে আগের রাতে ইভিএম চালু করে ভোট দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে ইভিএমে ধানের শীষ প্রতীকের বোতাম ছিল না। কোনো কেন্দ্রে ধানের শীষে ভোট দিলে আম প্রতীকে চলে গেছে।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে নয়, প্রশাসন যন্ত্রের সঙ্গে নির্বাচন হয়েছে। সব এজেন্ট প্রশাসনের সামনে অসহায় ছিল। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কারও সহায়তা পায়নি। প্রতি কেন্দ্রে বহিরাগত জড়ো করা হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে সাধারণ ভোটাররা কেউ কেন্দ্রে আসতে পারেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে ভোট ডাকাতির ইতিহাস উন্মোচিত হয়েছে।’