গোপন বুথে তদারকিতে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট!
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্র ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এই কেন্দ্রে ভোটারদের ভোট দিতে সহযোগিতার নামে কেন্দ্রের গোপন বুথে বা বুথের পাশে অবস্থান নিচ্ছেন নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা। যিনিই ভোট দিতে বুথে প্রবেশ করেন তাকে (ভোটার) এজেন্টরা তাদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে তারা বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় এই দৃশ্য দেখা যায়।
লাবিব হাসান (ছদ্মনাম) নামে একজন ভোটার নিজের ভোট প্রয়োগে গোপন বুথে প্রবেশ করেন। এ সময় দেখা যায়, আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাস সুমনের (ঠেলাগাড়ি) দুই এজেন্ট তার পেছন পেছন বুথে যান। তারা ওই ভোটারের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি কোথায় ভোট দিচ্ছেন তা তদারকি করেন।
ভোটকেন্দ্রের ভেতরে জানালা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছেন এজেন্টরা
ঘটনার পর তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকার এজেন্ট বলেন, ‘নতুন তো তাই সহোযোগিতা করছিলাম।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জয়নুল আবেদিন।
এর আগে সকালে বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কিশোরদের দিয়ে কৃত্রিম লাইন তৈরি করে রাখা হয়েছে। আর বাইরে থেকে সাধারণ ভোটাররা ঢুকতে না পেরে ভোট না দিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। ভেতরে সরকারের দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টরা অবস্থান নিয়েছেন। তাদের পছন্দের ভোটার এলেই তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে নৌকার এজেন্টরা দাঁড়িয়ে আছেন ভোট কেন্দ্রের ভেতরে জানালা ঘেষে। একদল কর্মী নির্দিষ্ট রিকশায় ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। ভোটার চেনা গেলেই ইশারায় তাদের প্রবেশ করতে দিতে বলা হচ্ছে। তা হলেই কোনো ভোটার ভোট দিতে পারছেন।
সকাল ১০টার দিকে বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কথা হয় সাহাবুদ্দিন আহমদ নামের এক ভোটারের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সকাল ৯টায় ভোট দিতে এসেছি, কিন্তু কোনোভাবেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারছি না। এই লাইন কোনোভাবে ফুরায় না। তারাই শুধু দাঁড়িয়ে আছে। আমি কয়েকবার কাছে গিয়ে বললাম, আমার ভোট এখানে। কিন্তু তারা বলছে আমার ভোট নাকি নাই! অথচ গত এমপি ইলেকশনেও আমি ভোট দিয়েছি।’