কেন্দ্রে ঢোকার পরই বের করে দেয়া হয়, অভিযোগ বিএনপির এজেন্টদের
‘সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না। ৮টার দিকে আমরা কেন্দ্রে প্রবেশ করছি। আমরা বসছি, আমাদের থেকে সিগনেচার নেয়া হইছে যে, ভোটশূন্য। সিগনেচার করার পরপরই আমাদেরকে তুলে দেয়া হয়েছে যে, এখানে বিএনপির এজেন্ট বসতে পারবে না। আমরা যখন বের হচ্ছিলাম না তখন তারা বললো, স-সম্মানে বের হবেন, না পুলিশ দিয়ে বের করবো?’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে নগরের বাকলিয়া ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর দুই নারী এজেন্ট শিরিন ও পুতুলের। কেন্দ্রে থেকে বিতাড়িত হয়ে চকবাজার টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (বিএড কলেজ) কেন্দ্রে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে এসে এসব কথা বলেন তারা।
একই অভিযোগ করেছেন কদম মোবারক এমওয়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএনপির পাঁচ এজেন্ট ওয়াকিল আহমদ, সেখ শফি, মো. শরিফ, এরশাদ ও রাজু। তারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্মীদের বাঁধায় সকাল ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারি নাই। পরে যাও প্রবেশ করলাম, এক ঘণ্টা পরে (বেলা ৯টা) আমাদের বের করে দেয়া হয়েছে।’
বিএনপি এজেন্ট ওয়াকিল আহমদ বলেন, ‘আমি কদম মোবারক এমওয়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম। আমাদেরকে সকাল ৮টা থেকে ওখানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমরা পোলিং অফিসারকে বুঝিয়ে ঢুকেছি। সকাল ৯টার মধ্যে আমাদেরকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে।’
এদিকে সকাল থেকে নগরের চাঁন্দগাও আবাসিক এলাকার সিডিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চকবাজার টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (বিএড কলেজ), এমইএস স্কুল, ঘাট ফরহাদবেগ, হামজারবাগ সরকারি প্রাথমিক স্কুল, কদম মোবারক উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৫টি কেন্দ্রে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
প্রতিটি কেন্দ্রের পাহারায় পুলিশ আছে। ভোট নেয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তারা আছেন। আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্ট আছে।
আছে ভোট নেয়ার যন্ত্র ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। কিন্তু ভোটার ও বিএনপির কোনো এজেন্ট নেই। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলছেন, ধানের শীষের এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে বিএনপি অভিযোগ করেছে।
এমনকি বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের নিজ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত নগরের চকবাজার টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (বিএড কলেজ) তিনটি কেন্দ্রে কোনো এজেন্ট নেই।
এ ব্যাপারে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সব এজেন্টকে মেরে বের করে দিয়েছে সকালে। আমি সকাল ৬টা থেকে মনিটরিং করছিলাম। ওভারঅল দেখলাম, বেশিরভাগ এজেন্টকে তারা মেরে বের করে দিয়েছে। এজেন্টদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা বললো, হ্যাঁ কার্ড-টার্ড ছিড়ে বের করে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিসাইডিং অফিসারকে জিজ্ঞেস করতে হবে, ধানের শীষের এজেন্ট নাই কেন? যদি একজন প্রার্থীর এজেন্ট না থাকে তাহলে উনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে যে, ওই প্রার্থীর এজেন্ট কোথায় গেল, এরা কোথায়? নির্বাচন কমিশনেরই একটি অংশ এজেন্ট। এটা দেখা তাদেরই দায়িত্ব।’
ভোট কেন্দ্রগুলোতে বিএনপির এজেন্ট না থাকার প্রসঙ্গে সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে তারা (বিএনপি) কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি। সারা শহরে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।