চট্টগ্রাম নগরীতে সিরিয়াল বিস্ফোরণ
চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র এলাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওইসব ভোটকেন্দ্র এলাকায় চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ফলে ওইসব কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান ভোটাররা।
তারা বলেন, বুধবার সকাল ৬টার দিকে নগরীর ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডের ফরিদেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ওয়াপদা কলোনি সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্র এলাকায় প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর থেমে থেমে ৮টা পর্যন্ত অন্তত ৭টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ভোটকেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী সমশেরপাড়া, ফরিদেরপাড়া ও চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ফলে এসব এলাকার মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ওয়াপদা কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তেমন ভোটার নেই।
কয়েকজন ভোট প্রদান করলেও তারা আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীর অনুসারী বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।
এছাড়া নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ডের তিনটি কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে একের এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীরা লালখান বাজার মাদ্রাসা কেন্দ্র দখলের কথা জানিয়েছেন ভোটাররা।
একইভাবে নগরীর চকবাজার, উত্তর পাহাড়তলী, পাঠানটুলি, ফিরিঙ্গিবাজার ও বাকলিয়া এলাকার দুটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে আতঙ্ক উপক্ষো করে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ধরার খবর পাওয়া গেছে।
সকাল ৮টা থেকে নগরীর সবকটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরুর কথা জানিয়েছেন চসিকের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তবে ভোটকেন্দ্র এলাকায় বিস্ফোরণের বিষয়ে এখনো খবর পাইনি বলে জানান তিনি।
একই কথা বলেছেন সিএমপির উপকমিশনার মো. আবদুল ওয়ারিশ। তিনি বলেন, ভোটগ্রহণ সবে শুরু হয়েছে। গণ্ডগোলের কোন খবর পাইনি। তবে খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। মাঠে পুলিশ ফোর্স আছে। ম্যাজিস্ট্রেট আছে। গণ্ডগোল হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী সকাল নয়টায় বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের ভোট প্রদান করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শুরু হয়েছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ নৌকায় ভোট দিবেন। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সকালে মা শায়েস্তা খানমের দোয়া নিয়ে নগরীর চকবাজার বিএড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন। ওই কেন্দ্রে কিছু সময় কাটানোর পর বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. মারুফ হোসেন।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো চসিক নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরধ্যে ৪১৭টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে নির্বাচনে ৭ হাজার ৭৭২ জন পুলিশ সদস্য, ২৫ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪১টি টিম মাঠে তৎপর রয়েছে। এছাড়া পুলিশের রিজার্ভ টিম ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলে জানান সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।