মেক্সিকোয় মাদকচক্রের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১৯
উত্তর মেক্সিকোর একটি টাউনহলে মাদকচক্রের কয়েক ডজন বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থার অবনতির সর্বশেষ নজির হিসেবে দেখা হচ্ছে এ লড়াইকে। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
মেক্সিকোর মাদককারবারি ও চক্রকে যুক্তরাষ্ট্র যখন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার কথা ভাবছে, তখনই দেশটিতে নতুন করে সহিংসতা দেখা দিয়েছে।
শনিবার দুপুর থেকে এ হামলা শুরু হয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওবরাডোরের দায়িত্বগ্রহণের বছরপূর্তির প্রাক্কালে এই সংঘাত দেখা দেয়।
জরিপে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় বামপন্থী প্রেসিডেন্টের বড় দুর্বলতা হচ্ছে সহিংসতার লাগাম টেনে ধরতে না পারা।
ইতিমধ্যে প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। মেক্সিকোর মাদকচক্রকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে ঘোষণা দিতে মরিয়া মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
রোববার এক সমাবেশে মেক্সিকোর নেতা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে যে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছিল, তিনি তাতে ফিরে যেতে চাচ্ছেন না।
মেক্সিকো সিটিতে তার দায়িত্বগ্রহণের প্রথম বছর উদযাপন করার সময় এক সমাবেশে তিনি বলেন, তিনি কখনই এই অদ্ভুত বিকৃত মস্তিষ্কের কৌশল অবলম্বন করবেন না। মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে এমন কোনো পদক্ষেপও নেবেন না।
টেক্সাসের দক্ষিণ-পশ্চিম ইগল পাসের ৪০ মাইল দূরে ভিলা ইউনিয়ন শহরে রোববারের এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মেক্সিকোর শীর্ষ মাদকচক্রের দলছুট গোষ্ঠীগুলো আরও সহিংসতা উসকে দিতে পারে বলেই সবাই ধারণা করে আসছেন।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একসময়কার ক্ষমতাশালী মাদকচক্র জেটাসের একটি শাখা এ হামলা চালিয়েছে। সীমান্ত শহর নিউভো লারেডোতে তারা মাদকপাচারে সক্রিয় বলে খবরে জানা গেছে।
গালফ ও জিটাস মাদকচক্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেশ কিছু ছোট ছোট গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তামাওলিপাস ও কাছাকাছি রাজ্যগুলোতে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।
বিভিন্ন পত্রিকার খবরে জানা গেছে, সশস্ত্র ও বিভিন্ন চক্রের লোগো বহনকারী অন্তত ১৪টি ট্রাকযোগে হামলাকারীরা ভিলা ইউনিয়নে হানা দেয়। তারা এমন ভয়ঙ্কর সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে যে টাউনহলের সামনের অংশগুলো গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায়।
আতঙ্কিত স্থানীয়রা তাদের ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখেন। বাতাসে তখন কেবল গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। অন্তত ৯০ মিনিটের লড়াইয়ের পর হামলাকারীরা চলে যান।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের তাড়িয়ে দিতে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারের সহায়তায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা অভিযানে নামে। রোববার সকাল পর্যন্ত সেই অভিযান চলে।
নিহতদের মধ্যে তিন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ও মাদকচক্রের ১৩ সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় দুই বেসামরিক নাগরিককে অপহরণ করে হত্যা করে মাদককারবারিরা।
তবে এই শহরটি কেন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।