বাংলাদেশে এখন পুনরার গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটেছে: ডক্টর আব্দুল মঈন খান
ডক্টর আব্দুল মঈন খান বলনে, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল উপজীব্য যে গণতন্ত্রের জন্য এদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ অকাতরে রক্ত দিয়েছিলেন, সেই গণতন্ত্র আজ বাংলাদেশ হতে নির্বাসিত। বাংলাদেশে এখন পুনরার গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটেছে। এবার “অলিখিত বাকশালের” নিষ্পেষণে চলছে এদেশ থেকে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার প্রক্রিয়া। বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন-অত্যাচার, মামলা-হামলা হয়েছে বাংলাদেশে প্রতিদিনের নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। বৃহত্তম বিরোধী দলের নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করা থেকে শুরু করে সকল বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের ওপর চলছে চরম নির্যাতন-নিষ্পেষণ। তাদের ওপর দেয়া হয়েছে এক লক্ষেরও বেশী মিথ্যা মামলা এবং ৩৫ লক্ষেরও বেশী নেতা কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বৈরশাসনের নির্যাতনের চেয়েও আরও বেশি ভয়ঙ্কর যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সেটা হলো বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের গণতান্ত্রিক ছদ্মাবরণ – একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে বিরোধী দলের উপর অত্যাচারের নির্মম কশাঘাত, অন্যদিকে সরকার মিডিয়াকে জিম্মি করে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে “গণতন্ত্রের ভান” ধরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে “গণতন্ত্র ও উন্নয়নের সাজানো খবর” যার সঙ্গে এদেশের আর্থ-সামাজিক সকল বাস্তবতার সঙ্গে তৈরি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর অসঙ্গতি, কনেনা উন্নয়নরে নাম বাংলাদশেে এখন যা হচ্ছে তা হলো দূর্নীতির মহোৎসব।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পুর্তি তথা সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটির সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম কমিটির উদ্যোগে ২১ জানুয়ারি এক ওয়েবিনার-এর আয়োজন করা হয়। উক্ত আয়োজনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলনে, মুক্তিযুদ্ধের অপর যে আদর্শ এ দেশের মানুষ হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন সেটা ছিল আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্খা যার মাধ্যমে এদেশের কোটি কোটি ভাগ্যাহত দরিদ্র মানুষের হাতে বাংলাদেশ তুলে দিতে চেয়েছিল “কল্যাণ রাষ্ট্রের” মাধ্যমে একটি শোভন জীবন যাপনের মৌলিক অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার আশ্বাস। কিন্তু স্বাধীনতার পর ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও “ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের” কষাঘাতে সে আশা আজ সুদুর পরাহত। আজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নামে এদেশে ধনী দরিদ্রের ব্যবধান ক্রমাগত বেড়েই চলেছে গাণিতক হারে।
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ডক্টর আব্দুল মঈন খান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ অবতারণা করে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ একটি ফুলের মালা স্বরূপ, যাতে অনেকগুলো ফুল রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ফুলগুলো হচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব । যেমন, হাজং, মুরং, কোল, ভীল, সাঁওতাল, রাখাইন, মারমা, খাসিয়া, চাকমা, গারো, কোচ, রাজবংশী, আর বাঙালীরাও সেখানে একটি ফুল। সব ফুলগুলোর সমাহারে যে ফুলের মালাটি তৈরী হয়েছে তারই নাম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।