আমাদের নিজেদের মধ্যে অহংকার হয়, গর্ব হয় জিয়া-খালেদা-তারেক আমাদের নেতা: বিএনপি

0

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) অনুশোচনার কারণ, তাদের নেতা (শেখ মুজিব) স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারেননি। শহীদ জিয়া কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মানুষদের জাগিয়েছিলেন। তাই আওয়ামী লীগ লজ্জায় মরে যায়। তারা অনুশোচনায় ভোগেন।’

গতকাল বুধবার (২০ জানুয়ারি) দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমান সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘আমাদের মত জায়গা থেকে একজন ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ সম্পর্কে বলা খুব কঠিন। গয়েশ্বর দাদার কিছু সান্নিধ্য আছে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে। তিনি সরাসরি কাজ করেছেন তাঁর সাথে। আমরা ছাত্র রাজনীতি করেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিএনপির প্রোগ্রামে খুব কাছাকাছি দেখেছি। কিন্তু তাঁকে আরও ভেতর থেকে জানেন গয়েশ্বর দাদারা, আমরা হয়তো ততটা জানি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু জানি তাঁর (জিয়াউর রহমান) কর্মকাণ্ড সম্পর্কে। আমরা যখন জিয়াউর রহমান, এরশাদ, আবার শেখ হাসিনার মাঝে তুলনা করি, তখন আমাদের নিজেদের মধ্যে অহংকার হয়, গর্ব হয়। আমি একটা সঠিক রাজনৈতিক দল, বিএনপির মত রাজনৈতিক দলের একজন কর্মী হিসেবে সত্যিই নিজেকে ধন্য মনে করি। তখন গর্বভরে মনে হয়, আমার নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, আমার নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমার নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ধারাবাহিকতা কার থেকে? ধারাবাহিকতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে। আপনি যেদিক দিয়েই বিশ্লেষণ করেন না কেন, সবদিক দিয়েই অতুলনীয়, অন্যন্য তিনি। ‍একটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তান আমলে গণতন্ত্রের কথা বলেছে, স্বায়ত্তশাসনের কথা বলেছে এবং এটারই একটা বৃহত্তর রূপ নিলো স্বাধীনতার যুদ্ধে। সে যুদ্ধের ঘটনা থেকে আমরা যদি এখন পর্যন্ত, আজকের দিন পর্যন্ত বিশ্লেষণ করি, প্রত্যেকটি জায়গায় দেখবেন আওয়ামী লীগের আত্মপ্রতারণা। ৭০ এর নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, কিন্তু পাকিস্তানিরা সেই নির্বাচনকে মেনে নেয়নি। এটারও রূপ নিলো স্বাধীনতা যুদ্ধে। কিন্তু, যুদ্ধ হবে কি হবে না, যুদ্ধের ঘোষণা যাবে কি যাবে না, ‍এটা নিয়ে কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সুষ্পষ্ট কোনও নীতিমালা ছিলো না। জনগণ এগিয়ে গেছে, ছাত্ররা এগিয়ে গেছে, কৃষক সমাজ, শ্রমিক, সেনাবাহিনী সবাই স্বাধীনতার জন্য উজ্জীবিত।’ 

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ভূমিকা কী? এটা কি নতুন করে বলার কোনও অপেক্ষা রাখে? আমি যদি বিএনপির যারা লেখক তাদের বই থেকে উদ্ধৃতি দিতাম তাহলে বলতেন, এরাতো সবাই বিএনপির নেতা বা বিএনপির বুদ্ধিজীবী। কিন্তু আপনি যদি আওয়ামী লীগের নেতা, আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীদের বই দেখেন তাহলে বলা হবে আমরা বিএনপি করি। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের যিনি প্রধান নেতৃত্ব দিলেন তাজউদ্দিন সাহেব, তাঁর বইয়ের মধ্যে বলা আছে, শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে যখন তাজউদ্দিন আহমদ গিয়েছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, “নাকে তেল দিয়ে ঘুমাও”। এটা যদি বিএনপির কেউ বলতো সাধারণ মানুষ অবিশ্বাস করতো? কিন্তু স্বাধীনতাযুদ্ধে আওয়ামী লীগের একজন প্রধান নেতার কন্যা এটা লিখেছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়েও যত আওয়ামী লীগের নেতা এমনকি প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড.ওয়াজেদ সাহেব তিনি তাঁর বইয়ের মধ্যে লিখছেন, “যখন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে মেজর জিয়া নামে একজন ব্যক্তি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন তখন আমরা আশান্বিত হলাম, তখন আমরা উদ্বুদ্ধ হলাম”। অতএব আর কোনও প্রমাণ লাগে? আর কোনও প্রমাণ লাগে না।’

আওয়ামী লীগকে ‘আত্মবিরোধী’ আর ‘স্ববিরোধী’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসছিলো। তখন তারা প্রায়ই বলতো, শেখ মুজিব নাকি বিডিআরের ওয়ারলেসে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা নিয়ে তখন তোলপাড় হৈ চৈ হতো। এর কোনও প্রমাণ নাই। তারা কোনও স্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি। আর এবার ক্ষমতায় এসে তারা বলে, ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যেই নাকি স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছে। এটাই তাদের স্ববিরোধিতা! একবার বলল বিডিআরের ওয়ারলেস আর এখন বলে ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যেই ‘ঘোষণা হয়ে গেছে’। অর্থাৎ স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে, স্বাধীনতা নিয়ে এবং স্বাধীনতার যে পালি এটার সাথে তারা যে মোটেও সংযুক্ত ছিলো না ‍এটা নিয়ে যে অনুশোচনা আছে এজন্যই একেক সময় একেক কথা বলে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com