সঙ্কটকালে জিয়ার পথ ধরার আহ্বান
দলের প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ অভিহিত করে বর্তমান সঙ্কটকালে তার অনুসৃত পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “বহুদলীয় গণতন্ত্র, মানুষের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, একদলীয় বাকশালী অন্ধকার থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের আদলের মধ্যে ঝুলিয়ে দেওয়া- এগুলো ছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় কীর্তি।
“আমি মনে করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের সামনে সবসময় উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো থাকবেন। সেই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে লক্ষ্য করেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।”
বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটা কঠিন সময় আমরা পার করছি। একদিকে করোনাভাইরাসের আক্রমণ। অন্যদিকে একটা ফ্যাসিবাদী একনায়কতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকার।
“এই বিরূপ প্রতিকূল অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ আমাদেরকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব দেখিয়েছেন। আমরা এখন দেখছি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান আজকে যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটা আমাদেরকে সেই দিক নির্দেশ করে।”
বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাড়ে ৫ ঘণ্টার এই আলোচনায় লন্ডন থেকে যুক্ত হয়েছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সারাদেশে মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়ে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে দেশ বিনির্মাণে যে যে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে, সেই সকল ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান সফল। এরজন্য তারা জিয়াউর রহমান, তার পরিবার এবং তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপিকে ভয় পায়।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আমরা আজকে যে কথা বলতে পারছি তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান, আজকে আওয়ামী লীগ যে কথা বলতে পারছে, রাজনীতি করতে পারছে- সেটাও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান।
“অথচ তারা অকৃতজ্ঞের মতো অস্বীকার করে শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদান। তারা তার মুক্তিযুদ্ধের পদক ছিনিয়ে নিতে চায়। জিয়াউর রহমান ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, ইতিহাসের নায়ক। সেই নায়ককে আপনারা সরাতে পারবেন না।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “জিয়াউর রহমান আমাদের দৃশ্যের আড়ালে হলেও মনের আড়ালে নয়। যতদিন গণতন্ত্র অন্ধকারে থাকবে, ততদিন গণতন্ত্র আলোর মুখ দেখবে না, ততদিন এদেশের মানুষ জিয়াকে মনে করবে।”
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বরিশাল মহানগর নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল, উত্তরের তো মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, চট্টগ্রাম মহানগরের আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম উত্তরের গোলাম আকবর খন্দকার, সিলেট মহানগরের নাসিম হোসাইন, কুমিল্লা মহানগরের আমিনুর রশীদ ইয়াসীন, রাজশাহী মহানগরের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, যশোরের নার্গিস বেগম, লালমনিরহাটের আসাদুল হাবিব দুলু বক্তব্য রাখেন।
সহযোগী সংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন ও ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন আলোচনায় বক্তব্য দেন।