বাংলাদেশ এখন মৃত্যু উপত্যকা, হত্যা-সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য: বিএনপি
সরকার রক্ত ঝরিয়ে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়, এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশকে এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। এখন হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ সন্ত্রাসের এক অভয়ারণ্যের নাম বাংলাদেশ।’
গতকাল রবিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গতকাল সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদে বিজয়ী তারিকুল ইসলামের ওপর আওয়ামী লীগের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের বর্বরোচিত হামলা এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী তারিকুল ইসলামের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নৃশংস ও পৈশাচিক হামলা এবং তাকে হত্যার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো, সরকার রক্ত ঝরিয়ে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন, পরমত সহিষ্ণুতা, বিবেক, সহমর্মিতা ও দয়া-মায়ার লেশমাত্র আওয়ামী লীগের বিধানে নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে যে খুনখারাবির মহৌৎসব চলছে তাতে রাষ্ট্র এক অমানবিক চেহারায় রূপ লাভ করেছে। সহিংস সন্ত্রাসই হচ্ছে এদের রাজনৈতিক আদর্শ। সেজন্যই বিরোধী দল ও মতকে দমন করে যাচ্ছে রক্তাক্ত কায়দায়। শুধু রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষই নয়, বিবেকবান নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবী যারা সত্য কথা বলছেন তারাও শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এখন হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ সন্ত্রাসের এক অভয়ারণ্যের নাম বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার দেশকে এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ন্যায়বিচার দেশ থেকে তিরোহিত হয়ে গেছে বলেই নিরন্তরভাবে বিরোধীপক্ষকে হত্যা করার পর বিচার না হওয়ায় হত্যাকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। দুষ্কৃতিকারীরা যেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় এনে যদি শাস্তি দেয়া হতো তাহলে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদে বিজয়ী তারিকুল ইসলামকে আওয়ামী লীগের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের হাতে জীবন দিতে হতো না।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশে এখন আইন-কানুনের কোনও বালাই নেই। সকল অবিচার-অনাচার আড়াল করতেই দেশব্যাপী দুষ্কৃতিকারীরা সরকারের প্রশ্রয়ে রক্তাক্ত কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুপথের যাত্রী হতে হলো তারিকুল ইসলামকে। তার ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা নিঃসন্দেহে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়।’
বিএনপি মহাসচিব তারিকুল ইসলামকে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। একইসঙ্গে বিবৃতিতে তারিকুলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন তিনি।