শুধু সৈয়দপুর বা নীলফামারীই নয় বরং উত্তরবঙ্গের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালাম: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমজাদ হোসেন সরকারকে হারিয়ে আমরা শুধু সৈয়দপুর বা নীলফামারীই নয় বরং উত্তরবঙ্গের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালাম। তিনি শুধু বিএনপি’র নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন সকল দল ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে আপামর জনতার নেতা। যার প্রমাণ আজকের এই জনসমুদ্র। যেখানে সমবেত হয়েছেন অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘তার স্থান পূরণ হওয়ার নয়। এসময় তার খুব প্রয়োজন ছিল আমাদের। কিন্তু আবেগ ভারাক্রান্ত হয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকে আজ বিদায় দিতে হচ্ছে। চির বিদায়ের সময়ই তার জানাজা সৃষ্টি করলো আরেক ইতিহাস। পরিসমাপ্তি ঘটলো সৈয়দপুরের ইতিহাসের অনবদ্য এক কিংবদন্তির।’
শুক্রবার বাদ জুমা সৈয়দপুর শহরের পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়ায় নীলফামারী-৪ আসনের সাবেক এমপি, সৈয়দপুর পৌরসভার চারবারের নির্বাচিত মেয়র ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: আমজাদ হোসেন সরকারের জানাজা-পূর্বে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘আমজাদ ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও সত্যবাদী। যে কারণে তাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারেনি। সবসময় তিনি সৈয়দপুরবাসীর উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। সারাটি জীবন সৈয়দপুরের মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে গেলেন। তিনি আপনাদেরকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। একারণে আপনারাও তাকে প্রিয় নেতা হিসেবে ভালোবাসেন। তাই তো বার বার তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আপনারা তাকে মাফ করে দিবেন এবং দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করেন।’
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও চিরিরবন্দর-খানসামা আসনের সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মিয়া, নীলফামারী-৪ আসনের এমপি আহসান আদেলুর রহমান আদেল, নীলফামারী-৪ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব শওকত চৌধুরী, নীলফামারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, নীলফামারী জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলমগীর সরকার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৈয়দপুর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও ইকু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক, পাবর্তীপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মিনহাজুল হক, হাজারীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, আমজাদ হোসেন সরকারের ছোট ভাই ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব রশিদুল হক সরকার এবং জেলা বিএনপি’র সাবেক কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব ইকবাল হোসেন ভোলা।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন সরকার, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক দিলনেওয়াজ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু, বসুন্ধরা কিংসের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশিল সমাজের ব্যক্তিবর্গ এবং সৈয়দপুরের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ।
জানাজা শেষে মরহুমকে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবা মকবুল হোসেন সরকারের পাশেই দাফন করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয় এবং বিএনপি’র দলীয় পতাকা দিয়ে কফিন ঢেকে সম্মাননা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমজাদ হোসেন সরকার ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তার স্ত্রী, একমাত্র ছেলে, তিন ভাই ও চার বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রয়েছেন।