আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের শত বছরের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে: আলাল
দেশকে ‘সিঙ্গাপুর’ নয় সরকারের ডিসিরা ‘জামালপুর’ এবং ‘দিনাজপুর’ বানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেন, এই সরকার কথায় কথায় বলে তারা দেশকে উন্নয়নে সিঙ্গাপুর বানিয়েছে। আর আমরা দেখি এই সরকারের ডিসিরা জামালপুর ও দিনাজপুর বানিয়েছে তার সহকর্মীকে ধর্ষণ করে। সুতরাং ‘পুর’ তারা ঠিকই রেখেছে কিন্তু ‘সিঙ্গা’ শুধু নাই। ‘সিঙ্গার’ পরিবর্তে ‘জামাল’ ও ‘দিনাজ’ যুক্ত হয়েছে। আজকে সব জায়গায় তারা তাদের এই অবস্থাটাকে ছড়িয়ে দিয়েছে যেভাবে তারা সব জায়গায় নিজেদের নাম প্রচার করছে, একইভাবে এই কর্মকাণ্ড গুলোকে বিনা বিচারে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে রাজধানীর কলাবাগানের মাস্টারমাইন্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিনসহ সারা দেশে অব্যাহতভাবে নারী ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম যথাসময়ে তাদের এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন যার মধ্য থেকে বর্তমান এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা দেশব্যাপী এই যে অনাচার, নির্যাতন ও সামাজিক লাঞ্ছনা আমাদের সমাজ ও পারিবারিক ব্যবস্থাকে এবং শত বছরের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী ঝালকাঠির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তার অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি নাকি বছরের পর বছর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের সহযাত্রী ছাত্রলীগের নেত্রীদেরকে ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় হলে হলে বিক্ষোভ হয়েছে। আমরা দেখেছি সিলেটে একটি রঙ্গশালায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে, সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদিকাকে। সেখান থেকে বোনদেরকে এবং ভাইদেরকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনা, ধানের শীষে ভোট দেয়ার অপরাধে নোয়াখালীতে গণধর্ষণের ঘটনা থেকে শুরু করে আজ অবধি যা হচ্ছে প্রতিটি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ দেশের বিবেকবান মানুষরা জানাচ্ছে।
আলাল আরও বলেন, বিচারপতির খাসকামরায় পর্যন্ত যৌন হয়রানি হচ্ছে। আজকে কোথায় যাবো আমরা? কোথায়ও যাওয়ার জায়গা নেই। এজন্য বলতে চাই এই মোমবাতি প্রজ্জ্বলন শুধু মোমবাতি প্রজ্জ্বলন নয়, এই প্রজ্জ্বলন এর মধ্য দিয়ে বলতে চাই বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে এই জনতা। এই বিচারের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো। যেখানেই অনাচার সেখানেই নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম তাদের অগ্রযাত্রা বহমান রাখবে।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এবং বিএনপি স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ছাত্রদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।