এক-এগারো ছিল দেশি-বিদেশি চক্রান্ত: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে যে অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছিল সেটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা ছিল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করার জন্য দেশি-বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের অংশ।সেই অভ্যুত্থানকারীদের যোগসাজসে একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে আজকের এই সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
গতকাল সোমবার (১১জানুয়ারি) বিকেলে ১১ জানুয়ারি উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করছে। গণতন্ত্রকে ইতিমধ্যে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষের যে স্বপ্ন, একটা সত্যিকারের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা; একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা; সেই স্বপ্নকে আজকে আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এক-এগারো সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে সম্পূর্ণ বিনাভোটে আবারও তাদের ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। আমরা এটাও জানি ২০১৮ সালে একই কায়দায় আগের রাতে জনগণের ভোট চুরি করে আবারও সেই অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়।
তিনি বলেন, আমরা আজকে যখন এক-এগারোর বিরাজনীতিকীকরণ নিয়ে আলোচনা করছি তখন বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর। দুর্ভাগ্য আমাদের ৫০ বছরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ বের করতে পারিনি, সেটা পারিনি শুধু এই আওয়ামী লীগের জন্য। কারণ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছে। একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। তারা আদালতকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের মানুষ যে ব্যবস্থাটা মেনে নিয়েছিল সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান নিয়ে এসেছে।
মীর্জা ফখরুল বলেন, আজকে একদিকে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। লুটপাটের অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অন্যদিকে চরম দুর্দিনে যখন কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বকে পাল্টে দিচ্ছে, তখন অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে দেখছি যে সরকারি মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা ভ্যাকসিন নিয়েও লুটপাটের একটা আয়োজন করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বাংলাদেশের এই লুটপাটের অর্থনীতি পরিবর্তন করতে চাই। আমরা একদলীয় শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা এখানে সত্যিকার অর্থে সাধারণ মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে চাই। মানুষের বাক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই।
তিনি বলেন, আজকে আমরা দেখতে চাই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবেন। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া সরকারকে পরাজিত করবেন।
ভার্চ্যুয়াল এই আলোচন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।