বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত

গত ০৯ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ শনিবার, বিকাল ৪.৩০টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ীকমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য যথাক্রমে— ১. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২. ব্যরিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার ৩. মির্জা আব্বাস ৪. বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ৫. ড. আব্দুল মঈন খান ৬. জনাব নজরুল ইসলাম খান ৭. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৮. আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ৯. বেগম সেলিমা রহমান ১০. জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরে নিন্মে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।

১। সভায় বিগত ০২ জানুয়ারি ২০২১ সালে জাতীয় স্থায়ীকমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।

২। সভায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তার অনুপস্থিতিতে চার্জ গঠন ও ওয়ারেন্টজারীর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কারনে ১/১১এর মইনদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের অবৈধ সরকারের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বাংলাদেশে বিরাজনীতিক করনের প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে যেভাবে গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা, বানোয়াট মামলায় কারারুদ্ধ করেছে একই ভাবে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ওপর শারীরিক নির্যাতন করে নির্বাসিত করেছে এবং অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার এবং বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ভূয়া বানোয়াট মিথ্যা রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলায় জনাব তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে চার্জগঠন ও ওয়ারেন্ট জারী সম্পূর্ণভাবে আইনের পরিপন্থি দখলদার সরকারের বাকশালী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

এই হীন অপচেষ্টার প্রতিবাদে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের চার্জগঠন ও গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর প্রতিবাদে আগামী ১৩ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অথবা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করবে।

৩। সভায় ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরনের লক্ষ্যে সংবিধান সম্মত তত্তাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে বেআইনী সেনা সমর্থিত সরকার গঠন করা হয়। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ বহুসংখ্যক রাজনৈতিক নেতাকে মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়। মূল লক্ষ্য ছিলো দেশ প্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে র্নিমূল করা। ১/১১ এর বেআইনী সরকার পরিকল্পিত ভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙ্গে দিয়ে ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা প্রদানের নীল নকশা বাস্তবায়ন করে। আজকের অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার তারই ধারাবাহিকতায় এদেশের মানুষের আকাংখিত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ফ্যাসীবাদী শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিনা নির্বাচনে পার্লামেন্ট, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করন করেছে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ভূলুণ্ঠিত। দূর্নীতি ও সন্ত্রাস চরম ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ সেই ভয়ংকর কালো দিন কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ষড়যন্ত্রের দিনে আওয়ামী লীগের কলংকিত রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি সোমবার বিকাল ৩টা কেন্দ্রীয় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করবে।

৪। সভায় কোভিড-১৯ করোনাা ভাইরাসের টীকা আমদানীর দায়িত্ব শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারী বিতর্কিত বেক্সিমকো গ্রুপকে প্রদানের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে মানুষের জীবন রক্ষাকারী এই টীকা আমদানীর প্রক্রিয়ায় অস্টষ্টতা, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির ফলে জনগণের এই টীকা প্রাপ্তি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সরকারের লাভ জনক পদে নিয়োগকৃত কোন ব্যক্তির যিনি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা তার এই সম্পৃক্ততা বেআইনী এবং অপরাধ মূলক ভারতীয় হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র সচিব এর বক্তব্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ভ্যাকসিন প্রাপ্তিকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে গেছে। এর পরেও সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য জনগণের কাছে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।

৫। আগামী ১৯ জানুয়ারি মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পূনঃ প্রবক্তা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৫তম জন্মদিন। মহান নেতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করবে।

৬। সভা শেষে সভাপতি উপস্থিত সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার মুলতবী ঘোষণা করেন।

—মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি