আ.লীগ সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে দলীয়করণ করে নষ্ট করেছে: মির্জা ফখরুল

0

সরকার উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আজকে বলা হচ্ছে যে, এই সরকার যথেষ্ঠ উন্নয়ন করেছে, তারা নিজেরাই নিজেদের কথা বলছে এবং তারা নিজেদেরকে একটা উন্নয়নের রোল মডেল বলছে। ইউএনডিপি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গোটা এশিয়াতে কী অবস্থান, কোন কোন দেশের কি অবস্থায় আছে। তাতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়াতে পঞ্চম। ভুটানেরও নিচে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখানেই বুঝা যায় যে, আসলে আমাদের উন্নয়নে কথা যেটা বলা হচ্ছে এটা আসলেই একটা পুরোপুরিভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা ক্ষমতায় জোর করে টিকে থাকতে চায়।’

দলের স্বাধীনতা সূর্বণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সমস্ত ক্ষেত্রেই সরকার স্বাধীনতার সমস্ত চেতনাকে ধবংস করে দিয়েছে। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে দলীয়করণ করে নষ্ট করেছে, তারা অর্থনীতিকে আজকে একটা লুটপাটের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা পার্লামেনন্টকে পুরোপুরি একটা অকেজো পার্লামেন্ট তৈরি করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে। যার ফলোশ্রুতিতে আপনারা দেখেছেন যে, বিশিষ্ট নাগরিকরা তারাই তাদের বক্তব্য রাখছেন, বলছেন যে, এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে সম্ভব হবে না।’

দলের পক্ষ থেকে নেয়া স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী পালনের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি। আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য যে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে মূল চেতনাটিকে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি, যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি। আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ তারা শহীদ হয়েছেন মা-বোনেরা তারা সম্ভ্ম হারিয়েছেন। অনেক মূল দিতে হয়েছে আমাদের।’

‘সেই গণতান্ত্রিক চেতনাকে আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং গণতন্ত্রের জন্য যারা সেদিন লড়াই করেছিলেন, যুদ্ধ করেছিলেন তাদের সেই মর্যাদাটাকে পুণঃপ্রতিষ্ঠিত করা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুঃখ হয় যখন দেখি যে, একজন অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাকে যখন আমরা দেখি কারাগারে। তাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।’

‘আমরা যখন দেখি যে, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অপমান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রধান ছিলেন বা যারা সামনের সারির ছিলেন, যারা অগ্রণী ছিলেন তাদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। আসুন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পালন করি এবং মুক্তিযুদ্ধের সাথে যারা জড়িত ছিলেন তার সন্মান প্রতিষ্ঠা করি এবং মূল যে লক্ষ্যটি গণতন্ত্রকে পূণঃপ্রতিষ্ঠা করি।’

কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপকতা ও রাজনৈতিক পরিবেশের প্রতিকুলতার মধ্যে দলের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা জনগণের কাছে গিয়ে করার শঙ্কার কথাও বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনার প্রতিকুলতা ও বর্তমানে রাজনৈতিক যে পরিবেশ সেটাও আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি এবং স্বাধীনতার মূল চেতনাকে যারা আমরা ধারণ করি, লালন করি তাদের জন্য কোন পরিবেশে কিভাবে আমরা পালন করতে সক্ষম হবো সেটাও আমরা জানি না। কারণ ইতোমধ্যে দেখছেন যে, গত কয়েক বছর ধরে স্বাধীনতার চেতনাকে বিলুপ্ত করে দিয়ে, ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেটা আমরা মনে করি যে, ১৯৭১ সালে আমাদের যুদ্ধের মূল যে চেতনা ছিলো সেই চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করেছিলেন। আমাদের দলের আদর্শ ও লক্ষ্যে মধ্যে সবচেয়ে বড় যে কথাটা লেখা রয়েছে স্বাধীনতার চেতনাকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। স্বাধীনতা আমাদের বড় অর্জন এবং এই স্বাধীনতাকে আজকে রক্ষা করা এটাও আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, আজকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে, আমাদের সীমান্তে নাগরিকরা নিহত হচ্ছেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে। আমাদের দেশে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা শরণার্থী হয়ে প্রবেশ করেছে তাদেরকে প্রত্যাবাসনের জন্য যারা সরকার দখল করে আছেন তারা সেরকম কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com