শ্বশুরের ধর্ষণে প্রবাসীর স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা
ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীর সোনাগাজীতে এক সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী (২৫) ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে মো. শফি উল্যাহ (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত শফি উল্যাহ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছাড়াইতকান্দি এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জুন বিকেলে নিজ ঘরে ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। কিন্তু ঘটনাটি গত কয়েকদিন আগে জানাজনি হয়। ঘটনা জানাজানির পর থেকে অভিযুক্ত শফি উল্যাহ পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ ও গৃবধূর পরিবার সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ ও অভিযুক্ত শফি উল্যাহ একই বাড়ির বাসিন্দা ও আত্মীয়। গত দুই বছর আগে গৃহবধূর স্বামী প্রবাসে চলে যান। শ্বশুর একটি দোকানে চাকরি করার সুবাধে রাতে বাড়িতে এসে আবার সকাল সকাল কর্মস্থলে চলে যান। ঘরে শুধুমাত্র অসুস্থ্ শাশুড়িকে নিয়ে ওই গৃহবধূ থাকতেন। ঘরে কোন পুরুষ লোক না থাকায় শফি উল্যাহ প্রায় সময় তাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত। এমনকি টাকার লোভ দেখিয়ে ওই গৃবধূকে অনৈতিক কাজে প্রস্তাব দেয়। গৃহবধূ বিষয়টি তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও প্রবাসে স্বামীকে জানায়। তারা শফি উল্যাহকে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শফি উল্যাহ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। পরে গত ১৮ জুন দুপুরে খাবার খেয়ে ঘুমানোর সময় শফি উল্যাহ তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তারপরও গৃহবধূ বিষয়টি তার শাশুড়িকে জানায়। তিনি লজ্জায় বিষয়টি কাউকে বলতে বারণ করেন।
গত কয়েকদিন আগে গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসা করার সময় তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানতে পারেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে দুই দফা শালিসি বৈঠক করেও সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় সমাজ কমিটির লোকজন গৃহবধূকে থানায় গিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
গৃহবধূ জানান, শফি উল্যাহ তার আপন জেঠা শ্বশুর। তাকে বারবার নিষেধ করার পরও সে তাকে ধর্ষণ করেছে। তিনি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। বর্তমানে তিনি পাঁচমাসের অন্ত:সত্ত্বা।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত শফি উল্যাহকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর শারীরিক পরীক্ষার জন্য আগামীকাল (শনিবার) ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হবে। পরীক্ষা শেষে ২২ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য তাকে ফেনীর বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হবে।