যৌতুক: অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর গোপনাঙ্গে রডের খোঁচা-হত্যাচেষ্টা

0

মাদারীপুরের কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে ঘরে আটকে রেখে ফারজানা আক্তার (২০) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার শিকারমঙ্গল এলাকার মৃধাকান্দি গ্রামের হারেজ মৃধার মেয়ে ফারজানা আক্তারের সঙ্গে পূর্ব এনায়েতনগর এলাকার এনায়েতনগর গ্রামের সোবহান সরদারের ছেলে আরিফ সরদারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন আসবাপত্র দেয়া হয়। বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা ফারজানার দেড় বছর বয়সের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তাদের বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আরিফ সরদার ও তার পরিবারের লোকজন মিলে বিভিন্ন সময় ফারজানার ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।

বর্তমানে আরিফ সরদার তার বাড়িতে একটি পাকা বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এজন্য ফারজানার পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু ফারজানার গরিব বাবা এ টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আরিফ সরদার ও পরিবারের লোকজনরা ক্ষিপ্ত হয়। তারা ঘরের ভেতর আটকে রেখে প্রথমে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন এবং পরে গোপনাঙ্গে রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। এতে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে ফারজানা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালান স্বামী আরিফ। পরে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ফারজানাকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকের কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এদিকে নির্যাতকারী আরিফ এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ফারজানার অসহায় পরিবার এ ঘটনায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

আহত ফারজানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার পরিবার গরিব হওয়ায় আরিফের অনেক অন্যায়-অত্যাচার সব মুখবুঝে সহ্য করেছি। আমাকে শেষ করে দিয়েছে আরিফ ও তার পরিবারের লোকজন। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

আহত ফারজানার বাবা হারেজ মৃধা বলেন, ‘আমি যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আমার মেয়ে ফারজানাকে অমানবিক নির্যাতন করেছেন আরিফ সরদার ও তার পরিবারের সদস্যরা। আমার মেয়ের অবস্থা শারীরিকভাবে খুবই খারাপ। আমরা আরিফের ভয়ে মামলা করতে সাহস পাচ্ছি না।’

এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত আরিফের বাবা সোবহান সরদার বলেন, ‘ফারজানাকে মারধর করার পরে আমরা তাকে চিকিৎসা করিয়েছি। আর মারলে কী হয়েছে?’

এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিরউদ্দিন মৃধা বলেন, ‘নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com