প্রেমিকের সাথে দেখা ও উপহার নিতে গণধর্ষণের শিকার প্রবাসীর স্ত্রী
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় প্রেমিকের সাথে দেখা ও উপহার নিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। ধর্ষণের পর ওই গৃহবধূকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবী করে ধর্ষক যুবকরা। এ ঘটনায় জড়িত ৭ যুবককে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও এলাকার মোস্তফা বেপারীর ছেলে রোমান বেপারী (২০), একই এলাকার মোহসিন বেপারীর ছেলে জোবায়ের বেপারী (২১), মফিজ সরদারের ছেলে মোস্তারিন সরদার (২১), এহসান বেপারীর ছেলে সাহাবুল হোসেন সাকিব (২২), একই উপজেলার তরগাঁও বোয়ালের টেক এলাকার মৃত সফুর উদ্দিনের ছেলে মাসুম শেখ (২১), একই এলাকার শামসুল হক ভূঁইয়ার ছেলে রাকিব হোসেন (২০) ও বাদল মোড়লের ছেলে মাহফুজুল হক (২০)।
কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আফজাল হোসেন জানান, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চরখামের এলাকার আইন উদ্দিনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে প্রায় চার মাস আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার বীর আহমদপুর এলাকার এক গৃহবধূর সঙ্গে।
কাতার প্রবাসীর স্ত্রী ওই নারী এক সন্তানের জননী। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ১৬ ডিসেম্বর ওই গৃহবধূ কাপাসিয়া উপজেলার নবীপুর এলাকায় বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। পরদিন (বৃহস্পতিবার) মোবাইল ফোন উপহার দেওয়া ও প্রথমবারের মতো সাক্ষাতের কথা বলে তাকে বিকেলে বাড়ি থেকে ডেকে পাশের নির্জনস্থান নর্দারটেকের (বিলের মাঝে উঁচু জায়গা) কড়ই গাছ তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে সাখাওয়াত। বিষয়টি সাখাওয়াতের অন্য বন্ধুরা দেখে ফেলে। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ধর্ষণের শিকার ওই নারী দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় যুবকরা তাকে আটক করে পালাক্রমে আবারো ধর্ষণ করে। রাত প্রায় আটটা পর্যন্ত গণধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। পরে যুবকরা গণধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে আটকে রেখে তার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে হত্যার হুমকি দেয়। তারা মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের জন্য একটি বিকাশ নম্বরও দেয়।
কাপাসিয়া থানার ওসি আলম চাঁদ জানান, বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভিকটিমের মা। পুলিশ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিকাশ নম্বরটি ট্র্যাকিং করে অবস্থান নিশ্চিত করে। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার ও ধর্ষক সাহাবুলকে হোসেনকে আটক করে। পরে আটককৃতের তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার অপর ৬ জনকে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাখাওয়াতকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।