বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে একজনের মরদেহ সকালে আর অপর জনের বিকেলে উদ্ধার করা হয়।
নিহত দুই যুবক হলেন, উপজেলার সিঙ্গাবরুণা ইউনিয়নের মেঘাদল (বকুলতলা) গ্রামের মো. উকিল মিয়া (২৫) ও মাটিফাটা গ্রামের খোকন মিয়া (২৫)। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্ণঝোরা সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা জানিয়েছেন, উকিল মিয়া কলেজ শিক্ষার্থী আর খোকন ব্যবসা করেন। তাঁরা দুজন বন্ধু।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে উকিল মিয়া শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী বাবেলাকোনা গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার এক মেয়েকে বিয়ে করেন। মাঝেমধ্যে তিনি ওই গ্রামে যেতেন। আজ ভোরে উকিল ও তাঁর বন্ধু খোকন এই সীমান্তের ওপারে চলে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে দুজনই গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়দের ভাষ্য, এই দুই যুবক ভুলে ওপারে চলে যান। সূত্রগুলো বলছে, গুরুতর আহতাবস্থায় উকিল সীমানা পিলারের ২৫০ গজ অভ্যন্তরে শ্রীবরদীর পানবাড়ি এলাকায় চলে আসেন এবং সেখানেই মারা যান। পরে সকালে বিজিবির কর্ণঝোরা সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। অপরদিকে গুলিবিদ্ধ খোকন সীমানা পিলারের অদূরে কর্ণঝোরা নদীতে পড়ে মারা যান। বিকেল তিনটার দিকে ওই নদী থেকে খোকনের লাশ উদ্ধার করে বিজিবি। এ সময় শ্রীবরদী থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়।
বিজিবির কর্ণঝোরা সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার খন্দকার আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তের শূন্যরেখার ওপারে চলে যাওয়ার কারণেই বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ ব্যাপারে মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলার রিংখিংপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের সঙ্গে তাঁরা পতাকা বৈঠক করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিজিবি দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।
সিঙ্গাবরুণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, এই দুই যুবকের নিহতের বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি এমন পরিস্থিতিতে গুলি না করে সে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করার জন্য বিএসএফ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। নিহতদের বুকে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।