যত ঐশ্বর্য আফ্রিকার বুকে

0

আফ্রিকা শুধু দারিদ্র্য আর দুর্ভিক্ষপীড়িত মহাদেশ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অপার্থিব বুনো সৌন্দর্য। এই মহাদেশের বুকে কত যে ঐশ্বর্য ছড়িয়ে আছে তা জানলে বিস্ময় জাগবে মনে। আফ্রিকার খনি আর অতুলনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে লিখেছেন জুবায়ের আহাম্মেদ

আফ্রিকার খনিনির্ভর অর্থনীতি

একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আফ্রিকা মহাদেশ মানুষের এবং সভ্যতা থেকে অনেকটাই দূরে ছিল। জলপথে দক্ষিণ আফ্রিকার নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ ঝড়-ঝঞ্ঝার কারণে সেখানে যাওয়া একেবারেই অসাধ্য এক কাজ বলেই জানা ছিল পর্যটকদের কাছে। কিন্তু ফরাসি উপনিবেশের কারণে একপর্যায়ে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে আফ্রিকান দেশগুলো। তখন থেকেই জানা যায় আফ্রিকা কখনোই অন্ধকারে পতিত থাকার মতো দেশ নয়। আফ্রিকান দেশগুলো প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার যোগ্য। পশ্চিম আফ্রিকান সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত অংশের প্রায় পুরোটা জুড়েই আছে অগণিত প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দীর্ঘদিন ধরে সভ্যতার আলো না থাকায় জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে আফ্রিকা অনেক বেশি পিছিয়ে ছিল ইউরোপিয়ান দেশগুলো থেকে। যার সুবাদে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এমনকি কানাডার মতো দেশগুলো এসেও আফ্রিকান খনিগুলোর ব্যাপক সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। আর নিজেদের মাটিতেই আফ্রিকা ছিল খনিশ্রমিকের দেশ হয়ে।

প্রাকৃতিক সম্পদের তালিকা করতে গেলে আফ্রিকা বিশ্বের অন্য যেকোনো মহাদেশের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে থাকবে। প্রাকৃতিক গ্যাস, তামা, কোবাল্ট, লোহা, বক্সাইট, খনিজ তেল তো বটেই, বিশ্বের সবচেয়ে দামি কিছু ধাতুর খনিও এ দেশে রয়েছে। দামি ধাতুর মধ্যে সোনা, রুপা, হীরা, প্লাটিনামের খনিও এই মহাদেশে পাওয়া গিয়েছে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, পারমাণবিক শক্তি এবং গবেষণার অন্যতম উপাদান ইউরেনিয়ামের খনিও এই মহাদেশে রয়েছে। বর্তমানে আফ্রিকান মহাদেশের যতখানি সমৃদ্ধি তার সবকিছুই এই খনিনির্ভর অর্থনীতি থেকে উঠে এসেছে। খনি থেকে প্রাপ্ত সম্পদ এবং তার জন্য করা বিদেশি বিনিয়োগের বদৌলতেই আফ্রিকায় বর্তমানে বিশাল সব স্থাপনা, গবেষণা কার্যক্রম এবং শিল্প-বিপ্লবের কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

ধাতব সম্পদের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি উত্তোলন করা হয় ইউরেনিয়াম, প্লাটিনাম, নিকেল ও বক্সাইট। তবে লাভের অঙ্ক বিবেচনায় আফ্রিকার সবচেয়ে বড় খনিজসম্পদ সোনা ও হীরা। সমগ্র আফ্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খনি অঞ্চলগুলো থেকে বছরে ৫০০ টন সোনা আহরণ করা সম্ভব আর সারা বিশ্বে যত হীরা আহরণ করা হয়, তার প্রায় সবটাই আসে আফ্রিকান দেশগুলো থেকে।

বক্সাইটের প্রাচুর্য

খনি থেকে উঠে আসা জিনিসের মধ্যে যেসব জিনিস একেবারেই সাধারণ মানুষের অন্দরমহল পর্যন্ত উঠে এসেছে, তার মধ্যে সবার আগে যার নাম আসবে, তা নিঃসন্দেহে অ্যালুমিনিয়াম। অ্যালুমিনিয়াম অবশ্য সরাসরিই খনি থেকে উঠে আসে না। অ্যালুমিনিয়ামের আকরিক হিসেবে খনি থেকে উঠিয়ে আনা হয় বক্সাইট। আর সেখান থেকেই প্রস্তুত হয় বহুল ব্যবহার্য অ্যালুমিনিয়াম। পৃথিবীতে যত অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদিত হয় তার প্রায় পুরোটাই বক্সাইটের অবদানে। বক্সাইটের প্রথম সন্ধান মিলে ১৮২১ সালে। পরে বিভিন্ন গবেষণায় নিশ্চিত হওয়া যায় অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন করার ক্ষেত্রে এই বক্সাইটের ভূমিকা অনবদ্য। যার কারণে সারা বিশ্বে ব্যাপক আকারে বাড়তে থাকে বক্সাইটের চাহিদা। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করা পৃথিবীর প্রথম ৭০ শতাংশ বক্সাইটের পুরোটাই ব্যয় হয়েছিল অ্যালুমিনিয়াম তৈরির কাজে। মজার ব্যাপার হলো, সারা বিশ্বে অ্যালুমিনিয়াম ও বক্সাইটের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়ে চললেও শুধু আফ্রিকায় আবিষ্কার হওয়া বক্সাইটের খনি দিয়ে সারা বিশ্বের আরও কয়েক শতাব্দীর চাহিদা মেটানো সম্ভব।

আফ্রিকা মহাদেশ বক্সাইট উত্তোলনে সারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মূল খনির অবস্থান আফ্রিকায় হলেও এর মালিকানার দিক থেকে আফ্রিকার অংশ অত্যন্ত কম। বিশেষ করে গুয়েনা, ঘানা ও মোজাম্বিকে বক্সাইটের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে বক্সাইট উত্তোলনের ক্ষেত্রে গুয়েনার কীর্তি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। আফ্রিকান এই দেশটি বক্সাইট উৎপাদনে সারা বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ কিছু বক্সাইট উৎপাদন কোম্পানিও গুয়েনারই। এর মধ্যে উল্লেখ করা চলে এমবেন্ডি, অ্যাংলো আমেরিকান, অ্যালকান্ট, রিও টিনটো, বিএইচপি বিলিটন এবং অ্যালুমিনা কোম্পানি অব গুয়েনার নাম। ধারণা করা হয়, প্রতি বছর গুয়েনা থেকে ১৫ হাজার ৬০০ টন বক্সাইট আহরণ করা হয়। যদিও বক্সাইটের বিপুল উত্তোলনের পরেও গুয়েনার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির কারণে মোট আয়ের শুধু ৩০ শতাংশ আসে গুয়েনার কাছে। এই ৩০ শতাংশ থেকেই খনি শ্রমিকসহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করে থাকে দেশটি। বাকি আয় চলে যায় অন্য সব দেশের কাছে। গুয়েনার মতোই একই অবস্থা নাইজেরিয়ার ক্ষেত্রেও। বক্সাইটের বাইরেও আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে মিসর, ক্যামেরুন ও দক্ষিণ আফ্রিকা অ্যালুমিনিয়ামের উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ কিছু দেশের মধ্যে অবস্থান করছে।

ইউরেনিয়ামের রত্নভান্ডার

ইউরেনিয়াম বিশ্বের সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত আকরিকের মধ্যে অন্যতম। এর বাজার মূল্যও অত্যন্ত চড়া। আনুপাতিক হার বিশ্লেষণ করলে বলা চলে, বর্তমান বিশ্বে সমপরিমাণ স্বর্ণের তুলনায় ইউরেনিয়ামের দাম প্রায় ৪০০ গুণ বেশি। তবে এর উত্তোলন কাজও ঠিক ততটাই কঠিন। প্রতি এক টন আকরিক থেকে মাত্র এক কেজি ইউরেনিয়াম পাওয়া সম্ভব। ইউরেনিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ, যার মূল ব্যবহার হয় পারমাণবিক কাজের জন্য। প্রতি এক কেজি ইউরেনিয়ামের বিপরীতে প্রায় এক বছরের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। স্বাভাবিকভাবেই আধুনিক এই যুগে এর চাহিদাও তাই অনেক অনেক বেশি। ১৮৯০ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যান্টনি হেনরি বেকেরেলের বৈজ্ঞানিক গবেষণার পর থেকেই সারা বিশ্বেই ইউরেনিয়ামের সন্ধানে নেমে পড়েন বিজ্ঞানীরা। আর আফ্রিকাতে এসে এর বিপুল এক সম্ভাবনা দেখা যায়। অতীত বাদ দিলেও কেবল এ সময়ে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ৮ লাখ ৮৮ হাজার টন ইউরেনিয়াম আকরিক আছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আফ্রিকার বাইরে কাজাখস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় ব্যাপক ইউরেনিয়াম উত্তোলন করা হয়। তবে পরিসংখ্যান বলে সারা বিশ্বে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম আহরণ করা হয়, তার প্রায় ১৮ শতাংশের একক জোগান দিয়ে থাকে আফ্রিকান তিন দেশ। নাইজার, নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ইউরেনিয়াম খনিগুলো সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কিছু ইউরেনিয়াম আকরিকের উৎস। ২০১৪ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, নাইজারে প্রতি বছর ৪ হাজার ৫৭ টন ইউরেনিয়াম উত্তোলন করা হয়, যা সারা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ। আর পঞ্চম স্থানে আছে নামিবিয়া। যাদের বার্ষিক ইউরেনিয়াম উত্তোলনের পরিমাণ ৩ হাজার ২৫৫ টন। তবে বক্সাইটের মতো বেহালদশা এখানেও। ব্যাপক পরিমাণ মজুদ এবং চাহিদা থাকলেও ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে আফ্রিকান দেশগুলোতে ইউরেনিয়াম উত্তোলন বেড়েছিল মাত্র ৭ শতাংশ হারে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ইউরেনিয়াম মাইনিং কোম্পানি অ্যারেভা আফ্রিকান দেশগুলোতে ইউরেনিয়াম উত্তোলনের ক্ষেত্রে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

হীরার সম্ভার

সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে চলচ্চিত্রের মতো করে বলতে গেলে বলা যায়, আফ্রিকা এই পৃথিবীর হীরক রাজ। তবে তাদের অবস্থান অনেকটা হীরার খনির মজুরের মতো। যাদের হাত থেকেই হীরা উঠে আসে, কিন্তু নিজেদের কাছেই কানাকড়ি নেই। হীরা উৎপাদনের দিক থেকে অল্প কদিন আগেও আফ্রিকার আশপাশে ছিল না কোনো রাষ্ট্র। তবে আফ্রিকান হীরার সবচেয়ে বেশি মালিকানা রয়েছে নেদারল্যান্ডসের কাছে। বিশ্বের সবচেয়ে নিখুঁত হীরা কাটার জন্য যে দেশ অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত। রাশিয়া, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতে ব্যাপক পরিমাণ হীরা উত্তোলন করা হলেও আফ্রিকার কাছে সেসবের পরিমাণ যথেষ্ট কম। হীরা উত্তোলনের বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যেও আফ্রিকার জয়জয়কার। দক্ষিণ আফ্রিকা, অ্যাঙ্গোলা, বতসোয়ানা, নামিবিয়া এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মতো দারিদ্র্যপীড়িত দেশেই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণের হীরা। আফ্রিকান দেশ বতসোয়ানাতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই হীরার খনি জোয়ানেঙ এবং ওরাপা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরা খনির কোম্পানি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ডি বেয়ার। আর তাদের মালিকানাতেই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরার খনি কিম্বারলি। কিন্তু ২০১৫ সালেই ডি বেয়ার এই খনিটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় এর কার্যক্রম। বর্তমানে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আর্থিক দিক বিবেচনা করলে আফ্রিকা হীরার দিক থেকেই বিশ্বের অন্যতম ধনী মহাদেশ হতে পারত। সারা বিশ্বের মোট হীরার ৭৫ শতাংশই উত্তোলন করা হয় আফ্রিকা থেকে। পরিমাণ হিসেবে বলতে গেলে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ক্যারেট হীরা উত্তোলন করা হয়। আর এর বাজারমূল্য আনুমানিক ১৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরার খনি কোম্পানি ডি বেয়ার মোট ২৮টি আফ্রিকান দেশে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি দক্ষিণ আফ্রিকান হলেও নামিবিয়াতে নামদেব এবং বতসোয়ানাতে সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে দেবসোয়ানা নামে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে উত্তোলনেই না, ডি বেয়ার হীরা বিক্রির ক্ষেত্রেই বিশ্বের সবচেয়ে নামি কোম্পানি।

কোবাল্টের সাম্রাজ্য

সামরিক কাজের জন্য সারা বিশ্বে কোবাল্টের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। রেডিওঅ্যাক্টিভ ট্র্যাকার এবং উচ্চমাত্রার গামা রশ্মি তৈরির জন্য কোবাল্টের প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া কালি, রং, বার্নিশ এবং যেকোনো কাচকে নীল রং দেওয়ার কাজেও কোবাল্টের শিল্পভিত্তিক বিপুল চাহিদা রয়েছে। পারস্যের বিভিন্ন অলংকার এবং মিসরীয় ভাস্কর্যগুলো অনেক আগে থেকেই কোবাল্টের ব্যবহার সম্পর্কে ঐতিহাসিক সাক্ষ্য দেয়। এ ছাড়া চীন, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের আদিম জনসমাজে কোবাল্টের ব্যবহার দেখা গিয়েছে। এর উজ্জ্বল নীল রঙের জন্য সারা বিশ্বেই এর ব্যাপক সমাদর রয়েছে।

আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোবাল্ট মজুদ রয়েছে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কাছে। ২০১২ সালের এই সমীক্ষা অনুযায়ী সারা বিশ্বে যত কোবাল্ট রয়েছে, তার অর্ধেক অংশের একক মালিকানা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কাছে। এমনকি বিশ্বের মোট উত্তোলিত কোবাল্টের ৫৫ শতাংশই আসে এই দেশটির কাছ থেকে। অথচ ২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত আফ্রিকান দেশটি সরকারিভাবে কোবাল্ট উত্তোলনের কোনো চেষ্টাই করেনি। পরে তিন মাসের নোটিস দিয়ে সব বিদেশি কোম্পানিকে নিজেদের কোবাল্ট খনি থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছিল দেশটি। কিন্তু প্রযুক্তিগতভাবে অনেক বেশি পিছিয়ে থাকার কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে হয় তাদের। আফ্রিকান দেশগুলোতে আলাদাভাবে কোবাল্ট উৎপাদন হয়। নিকেল ও কপার খনির সঙ্গেই উপজাত হিসেবে উত্তোলিত হয় কোবাল্ট। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ছাড়াও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলো এবং জাম্বিয়াতে বিপুল পরিমাণ কোবাল্টের মজুদ আছে বলে নিশ্চিত করেন ভূবিজ্ঞানীরা।

সবকিছু ছাপিয়ে আফ্রিকাতে সবচেয়ে বেশি আছে সোনা। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনা উত্তোলন হয় আফ্রিকার দেশগুলো থেকে। তবে আরব বিশ্বের কাছেই নিজেদের স্বর্ণখনিগুলো হারিয়ে ফেলেছে তারা। নিজেদের মালিকানা থেকেও শুধু নিজেদের ভুল আর অজ্ঞতার কারণে সম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে পারেনি দেশগুলো। আফ্রিকান মহাদেশের প্রায় সব দেশের কাছেই প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল মজুদ রয়েছে। কিন্তু দেশগুলো তাদের স্বাধীনতা অর্জনের শেষপর্যায়ে বিভিন্ন আত্মঘাতী চুক্তি করে ফেলে। যার কারণে সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনতা খুঁজে পায়নি তারা। এখনো উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকার অনেক দেশই নিজেদের খনিজসম্পদের জন্য ফ্রান্স, কানাডা কিংবা ইংল্যান্ডের ওপর নির্ভর করে। আফ্রিকান দেশগুলো তাই আজকের দিনেও রাজ্যহারা রাজা। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com