নদী লুটছে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীরা

0

বগুড়ার শেরপুরে বাঙালি নদীর চর কেটে মাটি লুটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতাসীন দলের লোক পরিচয়ে একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এ অপকর্ম করছে। প্রতিদিনই অবৈধভাবে কাটা মাটি ট্রাকে ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্থানীয় ইটভাটায়। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকায় নদীপাড়ের ফসলি জমি-বসতবাড়ি ও খেয়াঘাটে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন এলাকাবাসী। জানা যায়, শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বহমান বাঙালি নদী। আর এই নদীর চোমরপাথালিয়া বাজার অংশে নদীর চর ও তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে প্রায় ৮-১০ ফুট গভীর করে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেসব মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় বেশ কয়েকটি ট্রাকে ভরে শ্রমিকরা নিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটায়। এ সময় জানতে চাইলে সোলায়মান আলী, আলাউদ্দিন মেম্বারসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নদী তীরবর্তী ২০ শতক জমিটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। চোমরপাথালিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে সবুজ ও মাসুদের কাছ থেকে তাদের জমির মাটি কিনে নেন সুঘাট ইউনিয়ন বালু-মাটির ব্যবসায়ী বলে খ্যাত আতিকুর রহমান রঞ্জু। পরে তিনি আরও অন্তত ২০ বিঘা বাঙালি নদীর চর সরকারি জমি দখলে নেন। এরপর ওইসব জমি থেকে দিনরাত সমানতালে অবৈধভাবে মাটি কাটার উৎসব চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। আবু সুফিয়ান নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, নদীর চর ও তীরবর্তী জমি থেকে মাটি কাটা অব্যাহত থাকায় বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও খেয়াঘাটে যাওয়ার সড়ক   হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে এই ব্যক্তি বলেন, শুধু এখান থেকেই মাটি কাটা হচ্ছে-এমনটি নয়, করতোয়া ও বাঙালি নদীর একাধিক জায়গা থেকে একইভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। অথচ অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চুপ রয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে এই মাটি মহালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করছেন শরীফ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, সব মহলকে ম্যানেজ করেই মাটি কাটা হচ্ছে। সব আটঘাট বেঁধেই মাটি কাটার কাজে নেমেছেন তারা। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে সুঘাটের অভিযুক্ত মাটি ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান রঞ্জু বলেন, দেড় থেকে দুই বছর ধরে মাটি-বালুর কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বেকার হয়ে পড়েছি। এজন্য ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মাটি কিনে তা বিক্রি করছি। নদী বা সরকারি জমির মাটি কাটছেন না বলেও দাবি করেন তিনি। বগুড়ার শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ এ প্রসঙ্গে বলেন, মাটি কাটার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com