‘সবচেয়ে কঠিন’ লড়াইয়ে সিটিজেনরা
ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের হাইভোল্টেজ ম্যাচে আজ মুখোমুখি লিভারপুল-ম্যানচেস্টার সিটি। অ্যানফিল্ডে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায়। ১১ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় শীর্ষে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল। ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে টানা দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ম্যান সিটি। গত ১৫ বছরে সিটিজেনরা মোট চারবার জিতেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ট্রফি। শুধু লিভারপুলের মাঠে তাদের পারফরম্যান্স বদলায়নি। ২০০৩ সালে ২-১ গোলের জয়ের পর অ্যানফিল্ডে টানা ১৬ ম্যাচে জয়হীন ম্যানচেস্টার সিটি। এর মধ্যে ১১ ম্যাচেই হেরেছে তারা।
ম্যান সিটির স্প্যানিয়ার্ড কোচ পেপ গার্দিওলা অ্যানফিল্ডকে ‘ইউরোপের সবচেয়ে কঠিন মাঠ’ বলছেন। তার চোখে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী’ দল লিভারপুল। সবমিলিয়ে কঠিন এক লড়াইয়ে নামছে ম্যানচেস্টার সিটি।
লিভারপুলের কাছে আজ হেরে গেলে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়বে ম্যানচেস্টার সিটি। এ নিয়ে গার্দিওলা বলেন, ‘আমি জানি ম্যাচটা হেরে গেলে লোকে বলবে প্রতিযোগিতা শেষ। তবে এখনো অনেক ম্যাচ বাকি। কোচিং অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আমাদের শেষ পর্যন্ত লড়াই করা উচিত।’ গত মৌসুমে ম্যান সিটি-লিভারপুল দুই দলই দুর্দান্ত খেলেছিল লীগে। পুরো মৌসুমে মাত্র ১ ম্যাচ হারে লিভারপুল। আর ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যান সিটির কাছে শিরোপা হারায় ক্লপের দল। গার্দিওলা বলেন, ‘গত মৌসুমে ওরা মাত্র ১ ম্যাচ হেরেছে। এবার এখন পর্যন্ত অপরাজিত। কাজেই আপনি ধরে নিতে পারে ওরা খুব বেশি ম্যাচ হারবে না। কিন্তু মৌসুম দীর্ঘ। কাজেই অনেক কিছুই ঘটতে পারে।’
অ্যানফিল্ডের লড়াইয়ে ম্যান সিটি পাচ্ছে না ‘নাম্বার ওয়ান’ গোলরক্ষক এডারসনকে। আতালান্তার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচে চোট পান এডারসন। তার ইনজুরিতে ১৮ মাস পর প্রিমিয়ার লীগে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন চিলিয়ান ক্লদিও ব্রাভো। মাঝমাঠের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ডেভিড সিলভা ও রদ্রির খেলাও অনিশ্চিত। এছাড়া সাইডলাইনে থাকবেন লেরয় সানে, এমেরিক লাপোর্তে ও আকেজান্দার জিনচেঙ্কো। অন্যদিকে হাঁটুর ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন লিভারপুলের ডিফেন্ডার জোয়েল মাটিপ। কাফ (পায়ের গুল) ইনজুরিতে খেলতে পারছেন না মিডফিল্ডার জর্ডান শাকিরিও। তবে অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন জ্বর থেকে সেরে উঠেছেন।
চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে লিভারপুলের হয়ে সর্বাধিক ৬ গোল করেছেন সেনেগালিজ সাদিও মানে। লীগের শেষ ম্যাচে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে যোগ করা সময়ে গোল করে লিভারপুলকে জেতান তিনি। মিসরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ, ইংলিশ মিডফিল্ডার আলেক্স অক্সলেড-চ্যাম্বারলিনও রয়েছেন ছন্দে। ম্যানসিটিকে পথ দেখাচ্ছেন রাহিম স্টার্লিং-সার্জিও আগুয়েরো। আর্জেন্টাইন তারকা আগুয়েরো লীগি দ্বিতীয় সর্বাধিক ৯ গোল করেছেন। ইংলিশ স্ট্রাইকার স্টার্লিং করেছেন ৭ গোল। আর বেলজিক প্লেমেকার কেভিন ডি ব্রুইনা লীগে সর্বাধিক ৯ অ্যাসিস্ট করেছেন।
১৮৯৩ সালে লীগ ডিভিশন-২তে সর্বপ্রথম মুখোমুখি হয় লিভারপুল-ম্যান সিটি। এরপর সব প্রতিযোগিতায় ২১৩ ম্যাচে লড়েছে এই দু’দল। লিভারপুলের জয়ের পাল্লা ভারী- ১০৪ জয়ের বিপরীতে ৫৬ হার। ৫৩ ম্যাচ হয়েছে ড্র। সবশেষ অ্যানফিল্ডে কমিউনিটি শিল্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয় লিভারপুল-ম্যান সিটি। নির্ধারিত সময়ে ১-১ সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচটিতে টাইব্রেকারে জেতে সিটিজেনরা। এর আগে প্রিমিয়ার লীগে নিজেদের ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে লিভারপুলকে হারায় ম্যান সিটি। ওই দুই ম্যাচ আজ তাদের জন্য বড় প্রেরণা।
মুখোমুখি
মোট ম্যাচ: ২১৩
লিভারপুলের জয়: ১০৪
ম্যান সিটির জয়: ৫৬
ড্র: ৫৩