আগুনে পোড়ানোর সংস্কৃতির সঙ্গে আ’লীগই জড়িত: বিএনপি

0

জনগণকে আগুনে পোড়ানোর সংস্কৃতির সঙ্গে আওয়ামী লীগই জড়িত বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয় দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতারা গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের দায়-দায়িত্ব উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। 

আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বিএনপি সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং ১৯৯৪-৯৫ সালে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল, ২০০১-২০০৬ সালে শতাধিক দিন হরতাল করে জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। 

এমনকি ২০১৪-১৫ সালে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির আন্দোলনকে বিতর্কিত করা এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক ময়দান থেকে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। 

এখনও নিজেদের ভোট ডাকাতি, দুর্নীতি, লুটপাট, নারী-শিশু ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্মকে আড়াল করতে ১২ নভেম্বর গণপরিবহনে আগুন দিয়েছে তারা। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রিন্স বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে নজীরবিহীন ভোট ডাকাতি, জালিয়াতি থেকে জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই ঢাকায় কয়েকটি গণপরিবহনে আগুন লাগিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বানোয়াট ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, মামলার এজাহারে বাদী হিসেবে যার নাম রয়েছে তিনি মামলা দায়ের করেননি বলে জানিয়েছেন। এসব মিথ্যা মামলায় করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল বা বাসায় কোয়ারেন্টাইন বা চিকিৎসাধীন থাকা নেতাকর্মী, পঙ্গুত্ব বরণকারী নেতাকর্মী, রাজনৈতিক-সাংগঠনিক বা ব্যবসায়িক কাজে ঐদিন ঢাকার বাইরে অবস্থান করা নেতাকর্মী, স্থায়ীভাবে ঢাকার বাইরের অঞ্চলে বসবাসরত নেতাকর্মীদেরকেও জড়ানো হয়েছে। 

তাতে প্রমাণিত হয়েছে, সরকার অতীতের মতো এখনও প্রতিহিংসা ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হয়রানি করতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনের পর থেকে বেপরোয়াভাবে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে পুলিশি তল্লাশি অভিযান চলমান রাখা হয়েছে। 

এমনকি রাজধানীর বাইরেও বিভিন্ন অঞ্চলেও একই কায়দায় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার অভিযান চলছে। নেতাকর্মীদের বাসায় না পেয়ে বাসার সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে।

প্রিন্স বলেন, গত ১৩ নভেম্বর ফার্মগেটের খামারবাড়ী থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং পল্টন এলাকা থেকে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করা হয়েছে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করছে না। তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা গুম করা হয়েছে এই আশঙ্কায় দলের নেতাকর্মীসহ তাদের পরিবার-পরিজন গভীর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই মোস্তাফিজুর রহমান ও মিজানুর রহমান মিজানকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা অবিলম্বে এই দুজনকে জনসম্মুখে হাজির করার জোর আহবান জানাচ্ছি। নচেৎ তাদেরকে নিয়ে অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

প্রিন্স বলেন, এছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক জামশেদ উদ্দীনকে গত ১১ নভেম্বর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। ১৪ নভেম্বর তার বস্তাবন্দি লাশ সীতাকুণ্ড সাগর পাড়ে পাওয়া যায়। 

আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা ইউনিয়ন যুবদল নেতা জামশেদ উদ্দীনকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। এবং অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। 

এছাড়াও গত রাতে উত্তরা-পশ্চিম থানা বিএনপির নেতা মিলনকে বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com