‘ভোটের ফলাফল পকেটে রাখে নির্বাচন কমিশন’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমেরিকার নির্বাচনে তাদের জনগণের ব্যালটের প্রতিফলন ঘটে। তারা একবার নয় তিন বার ভোট গণণা করে তারপর চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে। আর নুরুল হুদা কমিশন আগে থেকে গণভবন থেকে পাঠানো ভোটের ফলাফল পকেটে তৈরি করে রাখে। যার কারণে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করতে তার ৫ মিনিট সময় লাগে।
রবিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে উপ-নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ও নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত বলেন, সামনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যেন কোনভাবে ভোট ডাকাতি করতে না পারে বেহুদা কমিশন, তার জন্য প্রত্যেকটি কেন্দ্রে নেতাকর্মীদের সারাদিন ব্যালট পেপার পাহারা দিতে হবে। যদি ভোট ডাকাতি করা হয়, কোন ধরণের কারচুপি করা হয়, তাহলে এই চট্টগ্রাম থেকে আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসুচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ উপ-নির্বাচনে ভোট ডাকাতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকারী দলের লোকজন ঢাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। পরিকল্পিতভাবে এ অগ্নিসংযোগ করে ভোট কারচুপি থেকে জনগণকে দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে গেছে। ঘটনার দিন চট্টগ্রামের যুবদল নেতা মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মো. শাহেদ, আহমেদুল আলম রাসেল চট্টগ্রামে অবস্থান করলেও তাদের নাম মামলায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। এটা আওয়ামীলীগের পুরনো অভ্যাস, দুই নাম্বারী তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে ফেনীতে হামলা করেছে আওয়ামীলীগের দলীয় চেয়ারম্যান শাহাদাত, সে সময় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে থাকলেও ফেনীর ঘটনায় আমার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আওয়ামীলীগের অনিয়ম, ভোট ডাকাতি ও দূর্নীতিকে আড়াল করার জন্য তারা একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে।
শাহাদাত বলেন, শেয়ার বাজারের লুটপাটকে আড়াল করার জন্য সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ শেয়ার বাজার লুটপাটে সালমান এফ রহমান ও ফারুক খান জড়িত ছিল। একইভাবে ভোট ডাকাতিকে আড়াল করতে বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে সরকার। নির্বাচনে যে ভোট কারচুপি হয়েছে সেটা নির্বাচন কমিশনার মাহবুবুল আলম নিজেই বলেছেন। তার ভাষ্যমতে এই দুই উপনির্বাচনে অতীতের চেয়ে জঘন্যভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ভোট ডাকাতিকে সরকার এখন নিয়মে পরিণত করেছে। জনগণের আস্থা হারিয়ে সরকার এখন আবোল-তাবোল বকছেন। পতন যখন সন্নিকটে চলে আসে, তখন পায়ের নীচে মাঠি থাকে না। তখন কি বলে না বলে তার হুশ থাকে না। আওয়ামীলীগের মন্ত্রী-এমপিরা এখন বেহুশে, তাদের কথা বার্তায় সেটা প্রমাণিত হচ্ছে। যার কারণে বিরোধীদল বিএনপি যখণ মাঠ পর্যায়ে সুসংগঠিত হচ্ছে তখন, গায়েবী আজগবী মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের ভয় দেখিয়ে দমানোর চেষ্ঠা করছেন। বিগত এক যুগ ধরে মামলা, হামলা আর জেল জুলুমে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন খাটিঁ সোনায় পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আর মামলা, হামলা দিয়ে কোন লাভ হবে না। আসন্ন চসিক নির্বাচনে যদি সারাদেশের মতো এখানেও ভোট ডাকাতির চেষ্ঠা করা হয়, তাহলে এই চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতনের বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে। তিনি অনতিবিলম্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাছির উদ্দীন, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আলী মূর্তজা খানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ঢাকার গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, তার মধ্যে খিলক্ষেত থানায় দায়ের হওয়া মামলায় যাকে বাদী হিসাবে দেখানো হয়েছে, সে নিজেই জানে না মামলার বিষয়ে। মামলায় কারা আসামী আছেন তাদের কাউকেও চিনেও না বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছে। এত করে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের মামলায় জড়ানো হয়েছে, তা ভূয়া এবং সাজাঁনো। এই ধরণের মামলায় বিএনপিকে স্তব্ধ করা যাবে না। এই মিথ্যুক ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের দীপ্ত শপথ নিতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সহসভাপতি এম.এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, এস.কে খোদা তোতন, মোহাম্মদ আলী, হারুন জামান, শফিকুর রহমান স্বপন, এস.এম আব্লু ফয়েজ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস.এম সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দীন, শাহ আলম, আবদুল মান্নান, আবুল হাসেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী সিরাজ উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, সহ-সাধারণ সম্পাদক জি.এম আইয়ুব খান ও শামছুল আলম (ডক) প্রমুখ।