বাবরি মসজিদ ধ্বংসে জড়িত যেসব সংগঠন
ভারতের অযোধ্যার আলোচিত বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি মামলার রায়ে মসজিদ নির্মাণে সরকারকে অন্যত্র পাঁচ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
দেশটির প্রধান বিচারক রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতির ভিত্তিতে শনিবার এই রায় দিয়েছেন।
এক দশক আগে আল্লাহাবাদ হাইকোর্টে হিন্দু ও মুসলমান মকদ্দমাকারীদের মাঝে জায়গাটি আনুপাতিক হারে ভাগ করে দেয়ার রায় দিয়েছিলেন।
উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ১৬ শতকের বাবরি মসজিদটি নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানরা কয়েক দশক ধরে তিক্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
হিন্দুদের বিশ্বাস, তাদের দেবতা রাম ওখানে জন্ম নিয়েছে।
১৯৯২ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং শিব সেনা পার্টির সমর্থকরা মসজিদটি ধ্বংস করে।
এর ফলে পুরো ভারতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।
আশির দশকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের রাজনৈতিক সহযোগী ভারতীয় জনতা পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে ওই স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য প্রচারাভিযান চালায়।
রাম মন্দির নির্মাণের জন্য কিছু শোভাযাত্রা ও মিছিল আয়োজন করা হয়েছিল। এসব শোভাযাত্রা ও মিছিলের মাঝে অন্তর্ভুক্ত ছিল রাম রথ যাত্রা, যার নেতৃত্বে ছিলেন লাল কৃষ্ণ আদভানি।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ওই স্থানে দেড় লাখ করসেবককে নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করে।
শোভাযাত্রা চলাকালীন সময় তারা সহিংস হয়ে পড়েন এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে মসজিদটি ভেঙে ফেলেন।
পরবর্তীকালে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায় যে, ঘটনাটির সঙ্গে ৬৮ জন জড়িত, যাদের মাঝে কিছু বিজেপি এবং ভিএইচপির নেতারও নাম বিদ্যমান।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দরুন ভারতের হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মাঝে সৃষ্টি হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, যা কয়েক মাস ধরে চলেছিল। এছাড়া এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ও তাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার হয়েছিল।